একজন মোবাইল বিক্রেতা যেভাবে পাচারকারী হয়ে উঠলেন
২০২১ সালে কুমিল্লা জেলার গৌরীপুরে একটি মোবাইল ফোনের শো-রুমে ৬ হাজার টাকা বেতনে চাকরি শুরু করেন আবু তাহের (২৬)।
তবে অচিরেই মোবাইল ফোন ব্যবসার অন্ধকার জগতের সঙ্গে পরিচয় হয়ে যায় তার। চাকরির সুবাদে অল্পদিনের মধ্যেই আন্তঃদেশীয় মোবাইল চোরাকারবারী চক্রের সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে তাহেরের।
একপর্যায়ে চাকরির পাশাপাশি তাহের নিজেও ভারত থেকে চোরাইপথে মোবাইল এনে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ শুরু করেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চোরাই মোবাইল ব্যবসার পরিধি বিস্তৃত করেছেন তিনি। নিজেই গড়ে তুলেছেন এক সংঘবদ্ধ চক্র।
শনিবার (২৯ জুন) রাতে র্যাব-৩-এর সদস্যরা রাতে নারায়ণগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাহেরসহ চোরাই মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৮০০-র বেশি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এছাড়া অবৈধ মোবাইল পরিবহনে ব্যবহৃত দুটি গাড়ি জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন: মেহেদী হাসান (২২), রুবেল হোসেন (২৯) ও মো. নুর নবী (৩২)।
রোববার (৩০ জুন) রাজধানীর কারওয়ানবাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফিরোজ কবীর বলেন, তাহের সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে গত দেড় মাসে প্রায় আড়াই হাজার মোবাইল ফোন বাজারে সরবরাহ করেছেন। কর ফাঁকি দিয়ে এসব মোবাইল ফোন ভারত থেকে চোরাই পথে আনা হয়।
তিনি বলেন, 'আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল, এই চক্রটি ভারতীয় কারখানায় তৈরি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন চোরাকারবারীর মাধ্যমে কুমিল্লা-ঢাকা রুট ব্যবহার করে রাজধানীতে নিয়ে আসত। সেই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।'
এই র্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গত দেড় মাসে ভারত থেকে অবৈধভাবে আনা আড়াই হাজার মোবাইল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহের বিষয়টি স্বীকার করেছে অপরাধীরা। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আনা এসব মোবাইল অপেক্ষাকৃত কম দামে বিক্রয় হয়। ফলে এসব অন্য মোবাইলের তুলনা এই মোবইলে চাহিদা বেশি।
তিনি বলেন, 'আইএমইআই নম্বর বিটিআরসির নথিভুক্ত না থাকায় অপরাধীদের কাছে এই মোবাইলের চাহিদা খুবই বেশি। তারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য এ ধরনের মোবাইল ব্যবহার করে।'