নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা: অবকাঠামোর পরিবর্তে স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় গুরুত্ব দেয়ার সুপারিশ সচিবদের
স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বেশি গুরুত্ব দিয়ে সরকার ঢালাওভাবে যেন অবকাঠামো প্রকল্প না নেয়— নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এমনটাই সুপারিশ করেছে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সচিবরা।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালামের সাথে একটি সভায় সচিবরা ঢালাওভাবে দেশে চার লেনের সড়ক না করে দ্রুত লভ্যাংশ নিশ্চিত করতে পারে, এমন প্রকল্প হাতে নেওয়ার আহ্বান জানান। বিষয়টির সাথে সংশ্লিষ্টরা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার, যিনি সভাটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাটি তৈরি করা হবে।
তিনি বলেন, 'সচিবরা আজকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনা সাজাতে পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বন্দর অবকাঠামো উন্নয়নের কথা বলেছেন।'
তিনি আরো বলেন, 'কোভিডের কারণে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। নবম পরিকল্পনায় তা পুষিয়ে দেওয়া হবে।'
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল মান্নান সভায় বক্তব্য রাখার সময় প্রাথমিক শিক্ষার দৈন্যদশার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, 'প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা বেশ পিছিয়ে আছে।'
দক্ষতাভিত্তিক মানবসম্পদ গড়ে তোলারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
বৈঠকে সচিবরা আরও বলেন, প্রকল্প গ্রহণের সময় সেটি আর্থিকভাবে লাভজনক হবে কি না তা সরকারের বিবেচনা করা উচিত।
তারা বিনিয়োগকারীদের জন্য পরিবহন সুবিধা উন্নত করার লক্ষ্যে শিল্প এলাকার কাছাকাছি বিমানবন্দর নির্মাণের ওপর জোর দিয়েছেন।
পণ্য আমাদনি-রপ্তানি দ্রুত ও সহজ করার জন্য বন্দর অবকাঠামো ও গভীর সমুদ্র বন্দর উন্নয়নেরও পরামর্শ দিয়েছেন সচিবরা।
২০২৫ সালের জুলাই থেকে ২০৩০ সালের জুন মাসের মধ্যে নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) এ পরিকল্পনা তৈরি করছে।
নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য ইতোমধ্যেই একটি ধারণাপত্র তৈরি করা হয়েছে। 'বাংলাদেশের নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (জুলাই ২০২৫ থেকে জুন ২০৩০): উচ্চ মধ্য আয়ের জন্য টেকসই এবং ন্যায়সঙ্গত প্রবৃদ্ধি' শিরোনামের ধারণাপত্র নিয়ে আলোচনা করার জন্য ১৫ টিরও বেশি মন্ত্রণালয়ের সচিব এ সভায় অংশ নেন।
ধারণাপত্র অনুযায়ী, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাটি জুলাই ২০২০ থেকে জুন ২০২৫ সময়ের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছিল। এটি ছিল চারটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা সিরিজের মধ্যে প্রথম যা সরকারের ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল।