কোটাবিরোধী আন্দোলন: কার কী বক্তব্য
হাইকোর্টের একটি রায়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি ফিরে আসায় আবার যে আন্দোলন, সে বিষয়ে দেশের শীর্ষ ব্যক্তি থেকে শুরু করে রাজনীতিকসহ অন্যরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
চলুন জেনে নিই কে কী বলেছেন-
"হাইকোর্টের রায় আমরা সবসময় মেনে নিই। কিন্তু আমরা দেখলাম যে এখন কোটাবিরোধী আন্দোলন আবার গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন করে। সেখানে মেয়েরাও আছে। এখানে আমার একটা প্রশ্ন: যারা এর আগে কোটাবিরোধী আন্দোলন করেছিল, তারা পাবলিক সার্ভিস কমিশনে কতজন পরীক্ষা দিয়েছিল আর কতজন পাস করেছিল?" -শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রী।
''বাংলাদেশের সংবিধানের ২৯ এর ১, ২, ৩ অনুচ্ছেদ পড়ে দেখবেন। কোটা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ সংবিধানবিরোধী। আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করি। কিন্তু তাদের ছেলে, তাদের পরের প্রজন্ম কোটা প্রথার বিষয়ে খুব একটা নীতির মধ্যে আসে না। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের দেশ সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এটা বাধা হতে পারে।" -জি এম কাদের, বিরোধীদলীয় নেতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় পার্টি।
''বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে এখন শিক্ষকদের আন্দোলন, কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করছে। বিএনপির কাজই হচ্ছে অন্যদের ইস্যুর ওপর ভর করা।" -ওবায়দুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী লীগ।
''একুশ শতকের এই সময়ে প্রযুক্তি ও জ্ঞানভিত্তিক বৈশ্বিক ব্যবস্থায় টিকে থাকতে মেধাভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। তাই সাধারণ ছাত্র সমাজের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবির সঙ্গে বিএনপি একমত। আশা করি, সরকার ছাত্রসমাজের যৌক্তিক দাবি মেনে নেবে।"
-মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব, বিএনপি।
''কোটা পদ্ধতির সমাধান শুধু আদালতেই হতে পারে, সড়কে নয়। ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কোটা পদ্ধতি বাতিল করে। হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহালের রায় দিয়েছেন। এখানে সরকারের কিছু করার নেই। এটা আদালতের এখতিয়ারভুক্ত। তাই কোটা ইস্যুটি একমাত্র আদালতেই সমাধান হতে পারে।"
-ড. হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
"ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে তাদের সন্তানদের কোটা দেবেন, এটা মেনে নেব না, এখানে আমাদের আপত্তি আছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের কোটা দেন। এটা তাদের প্রাপ্য। আর প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধের যেন যাথাযথ সম্মান দেওয়া হয়, এটাও কাম্য। এই কোটা ব্যতীত মেধার ভিত্তিতে চাকরি দিতে হবে। আর না হলে এই দেশ মেধাশূন্য হয়ে যাবে। সুতরাং শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন ভুল পথে যাচ্ছে না, তারা সঠিক পথেই আছে।"
-মির্জা আব্বাস. স্থায়ী কমিটির সদস্য, বিএনপি।
''আদালতের কাছে দাবি না, মহামান্য আদালতের কাছে আমাদের অনুরোধ। সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। কেন ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করা হলো? সরকার দায় এড়াতে পারে না। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকুরিতে কোটা বৈষম্য নিরসনও আমাদের অন্যতম দাবি। সরকারের হস্তক্ষেপের অনেক সুযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থী ও কোর্টকে মুখোমুখি করে সরকার নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে এবং দায় এড়োচ্ছে।"
-নাহিদ ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (কোটা সংস্কার আন্দোলন)।
"৩০ বছর মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীদের বঞ্চিত করা হয়েছে, তাই কোটার প্রয়োজন আছে।"
-আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ও বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।