আমি কোনোদিন বিসিএস দিইনি, আবেদ আলী মায়ের গাড়িচালক ছিলেন না: তাহসান
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার প্রেক্ষাপটে সংগীতশিল্পী তাহসান রহমান খান বলেছেন, তিনি কখনও বিসিএস পরীক্ষাই দেননি। কাজেই ২৪তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
এছাড়া পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আলোচিত সৈয়দ আবেদ আলী কখনও তার মা জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগমের গাড়িচালকও ছিলেন না বলে জানিয়েছেন এই জনপ্রিয় শিল্পী।
সম্প্রতি সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় পিএসসির উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক এবং সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী।
প্রশ্নফাঁস নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা মাঝে হঠাৎ করেই চলে আসে তাহসানের নাম। তাহসানের মা অধ্যাপক জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম ২০০২ সালের মে মাস থেকে ২০০৭ সালের মে মাস পর্যন্ত পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন।
কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ দাবি করেন, প্রশ্নফাঁস-কাণ্ডে গ্রেপ্তার আবেদ আলী ছিলেন তাহসানের মা জিনাতুন নেসার গাড়িচালক।
এর সঙ্গে আরও গুজব ওঠে, তাহসান তার মায়ের আমলে বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। পরে দুর্নীতির জন্য আবারও বিসিএসের ভাইভা অনুষ্ঠিত হলে ভাইভা থেকে বাদ পড়েন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে অবশেষে মুখ খুললেন তাহসান। একটি গণমাধ্যমকে এই সংগীতশিল্পী বলেছেন, তিনি কোনোদিন বিসিএস পরীক্ষাই দেননি।
ওই গণমাধ্যমকে তাহসান বলেন, 'মানুষ বোঝে এসব ভুয়া খবর। এরই মধ্যে মানুষজন এর প্রতিবাদও করছে। নানানজন নানানভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আরেকটা কথা, আমি কিন্তু কোনোদিন বিসিএস দিইনি। আর যেই গাড়িচালকের (আবেদ আলী) কথা বলা হচ্ছে, তিনি কোনো দিন আমার আম্মার গাড়িচালক ছিলেন না।'
এই শিল্পী আরও বলেন, 'এখানে একটা ভুল হচ্ছে। এই ড্রাইভার অফিসের অন্য ড্রাইভারদের মতোই একজন। তিনি আমার মায়ের ড্রাইভার নন।'
এছাড়া ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা রিউমর স্ক্যানারও জানিয়েছে, ২৪তম বিসিএসের ভাইভায় তাহসানের বাদ পড়ার বিষয়টি সত্য নয়।
রিউমর স্ক্যানার বলে, ২৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০০৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। তবে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ৩ মার্চ পরীক্ষাটি বাতিল করে পিএসসি। পরে আবার ২৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং লিখিত পরীক্ষা ও ভাইবার মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম শেষ হয়।
অর্থাৎ যে বিসিএসে তাহসান পররাষ্ট্র ক্যাডার হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে, সেটি প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পরই বাতিল হয়। তাই তাহসানের সুপারিশ পাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। তাছাড়া ২৪তম বিসিএসে ভাইবা একবারই হয়েছিল। ফলে পুনরায় ভাইবায় অংশগ্রহণের দাবিটিও অমূলক।