সালমান এফ রহমান, সাবেক এমপি শাওন ও সাবেক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করবে দুদক
বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও সাবেক পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, আত্মসাৎ, অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন, শেয়ারবাজার জালিয়াতিসহ অন্যান্য বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)
গত ১৬ আগস্ট দৈনিক কালের কণ্ঠ ও দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক এ উদ্যোগ নেয় বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
দুদক কমিশনের বিশেষ তদন্ত শাখা থেকে উল্লিখিত অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য মহাপরিচালকের (বিশেষ তদন্ত) কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে জালিয়াতি এবং শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডারদের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং প্রভাব খাটিয়ে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়া ৩৬ হাজার কোটি টাকার বেশি বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
দুদক জানিয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২২' অর্থবছর) লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলার গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) প্রকল্পের আওতায় শাওন কাজের বিনিময়ে খাদ্য বা কাবিখা থেকে ২ দশমিক ২৯ কোটি টাকা এবং কাজের বিনিময়ে টাকা বা কাবিটা থেকে ৩ দশমিক ৫০ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছে।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ ২৬০ দশমিক ৩৯ মেট্রিক টন গম এবং ২৩৪ দশমিক ৩৩ মেট্রিক টন চাল আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে।
অন্যদিকে, সাবেক পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
মন্ত্রী থাকাকালে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বদলির বাণিজ্য করে অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন। তার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ১ হাজার ৫০২ কোটি টাকার 'সুফল প্রকল্প'টিতে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক।
তার কথিত দুর্নীতির বিবরণ দিয়ে দুদক লিখেছে, মন্ত্রী ও তার ছেলে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে 'সুফল প্রকল্পে' ১০ শতাংশ কমিশন দিয়ে ঠিকাদারদের কাজ দিয়েছেন এবং বিভিন্ন খাতে মিথ্যা খরচ দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
তিনি ৮০-৯০ লাখ টাকার ঘুষের বিনিময়ে বন কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়ন করেছেন বলেও জানিয়েছে দুদক।
এছাড়াও, পরিবেশ দূষণে মারাত্মক প্রভাব রয়েছে এরূপ তরল বর্জ্য সৃষ্টিকারী বিভিন্ন কল-কারখানায় ইটিপি পরিদর্শন না করেই তারা সার্টিফিকেট দেন।
সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দুদকের তদন্তে সংস্থাটি আরও জানতে পারে যে, শাহাব উদ্দিন প্রায় ৭ কোটি টাকার বিনিময়ে বিএফডিআইসি'র তৎকালীন চেয়ারম্যানকে জমির বিনিময়ে রেজুলেশনে স্বাক্ষর করে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের জমি বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য করেছিলেন।