বিমানের টিকিট বিক্রির সিন্ডিকেট, বাণিজ্য বৈষম্য দূর করতে ৯ দফা দাবি আটাবের
গ্রুপ টিকিটিংয়ের নীতিমালা-নির্দেশনা প্রণয়নের পাশাপাশি এয়ার টিকিট বিক্রিতে সিন্ডিকেশন বন্ধের ব্যবস্থাসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (এটিএবি– আটাব)।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি (ওটিএ) ব্যবসা পরিচালনার জন্য যথাযথ প্রবিধান প্রণয়নের দাবি জানায় আটাব।
গ্রুপের নাম করে টিকিট ব্লক করা হলেও বাস্তবে এ ধরনের কোনো গ্রুপ নেই বলে সম্মেলনে জানান আটাবের সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ।
তিনি বলেন, "আমাদের দেশে এয়ার টিকিটের মূল্য কেন, বেশি এটি আমরা বার বার বলেছি। গ্রুপের নামে টিকিট ব্লক করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ এটি কোনো গ্রুপ নয়। মূলত টিকিটের দাম বাড়াতেই কৌশলে এগুলো করা হচ্ছে।"
ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, "বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন রুটের সিট যাত্রীর নাম ও পাসপোর্ট নম্বর ছাড়া পিএনআর তৈরির মাধ্যমে ফ্লাইটের কয়েক মাস পূর্বে ব্লক করে টিকিট মজুদতারী করা হয়। আর এই ব্লকড টিকিটগুলো এয়ারলাইন্স তাদের নির্ধারিত ট্রাভেল এজেন্সিকে দিয়ে থাকে।"
"বিশেষভাবে কম মূল্যের সিটগুলো গ্রুপ বুকিং করে ব্লক করার ফলে অন্যান্য ট্রাভেল এজেন্ট বা যাত্রীরা সেগুলো পায় না। এতে সিটের সংকট হয় এবং উচ্চমূল্যে টিকিট বিক্রি করা হয়," যোগ করেন তিনি।
অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কথা উল্লেখ করে আটাব সভাপতি বলেন, অনলাইনের মাধ্যমে ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর ব্যবসার সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি হলেও, এখানে বৈষম্য ও অনিয়মের মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, কিছু অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি যাত্রী ও ছোট এজেন্সিগুলোকে ছাড় এবং ক্যাশব্যাকের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে অগ্রিম অর্থ নিয়ে বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য ও ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে চাইছে।
সরকার-নিবন্ধিত প্রায় ৪,০০০ট্রাভেল এজেন্সির প্রতিনিধিত্বকারী আটাবের সভাপতি আরেফ বলেন– ট্রাভেল এজেন্সিগুলো যাতে এয়ারলাইন্স নির্ধারণ দামের চেয়ে কম দামে টিকিট প্রদশর্ন, বিজ্ঞাপন, বিক্রি বা বাজারজাত করতে না পারে– সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। আর এ ধরনের বাণিজ্য বৈষম্য প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়–কর্তৃক নির্দেশিকা প্রণয়ন করা জরুরি।
তিনি বলেন, "লাইসেন্সবিহীন কোনো ভুয়া এজেন্ট প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসা করার জন্য অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি (ওটিএ) যাতে লগইন আইডি প্রদান না করে সে মর্মে নির্দেশনা দিতে হবে।"
দাবিগুলো উল্লেখ করে আরেফ আরও বলেন, টিকিটের গায়ে এজেন্সির নাম, যোগাযোগের ফোন নম্বর, টিকিটের মূল্য বাধ্যতামূলকভাবে উল্লেখ কোর্টে হবে। বিদেশি ওয়েবসাইট/এপিআইগুলো যাতে বাংলাদেশে অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে না পারে সেজন্য বিদেশি ব্লক করা ও অর্থ পাচার বন্ধ করার বিষয়েও নজর দিতে হবে।
তিনি বলেন, "তৃতীয় দেশ (যাত্রা ও গন্তব্যের দেশ ব্যতীত অন্য কোনো দেশ। যেমন- ভারত, দুবাই, সিঙ্গাপুর) থেকে বিক্রয়কৃত টিকিটের যাত্রীদের বাংলাদেশের বিমানবন্দরে অনবোর্ড বন্ধ করতে হবে। তাহলে তৃতীয় দেশ থেকে টিকিট বিক্রি ও অর্থ পাচার বন্ধ হবে।"
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আটাবের সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ। এসময় উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ, সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান হিরো, মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান খান নেওয়াজ, যুগ্ম মহাসচিব আতিকুর রহমান প্রমুখ।