পদত্যাগ করেছেন দুদক চেয়ারম্যান ও ২ কমিশনার
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মইনুদ্দিন আবদুল্লাহ এবং দুই কমিশনার আজ (২৯ অক্টোবর) ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
৫ আগস্ট ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দুদককে আরও কার্যকর, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রস্তাব করার জন্য এই মাসের শুরুতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন গঠন করে।
দুদকের সিনিয়র কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, মোহাম্মদ মইনুদ্দিন আবদুল্লাহ, কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক এবং কমিশনার (অনুসন্ধান) আছিয়া খাতুন দুপুর ২টা ১০ মিনিটে অফিস ত্যাগ করেন এবং পদত্যাগপত্র জমা দেন। কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, মইনুদ্দিন নিজেও সাংবাদিকদের এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
২০২১ সালের ৩ মার্চ তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সাবেক কৃষি সচিব মঈনুদ্দিন ও জহুরুল, সাবেক বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং একজন সাবেক জেলা ও দায়রা জজকে এসব পদে নিয়োগ দেয়। মঈনুদ্দিন ও জহুরুল নিয়োগের সাত দিন পরে অফিসে যোগদান করেছিলেন।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের সাবেক সচিব আছিয়া ২০২৩ সালের ১৩ জুন নিয়োগ পান এবং ২ জুলাই দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
দুদকের সদর দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানা যায়, পদত্যাগের আগে তিনজনই অনানুষ্ঠানিকভাবে সবাইকে বিদায় জানান।
কর্মকর্তারা জানান, আজ দুদক সংস্কার কমিশনের সাথে নির্ধারিত বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগেই মইনুদ্দিন ও দুই কমিশনারের পদত্যাগের ঘোষণা আসে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এবং দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, মইনুদ্দিনের পদত্যাগের পর তিনি তার সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, "আমাদের দুদক কর্মকর্তাদের সাথে একটি বৈঠক নির্ধারিত ছিল, তবে তা বাতিল করা হয়েছে। তবে এ বৈঠকটি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা দুদকের সদর দপ্তর এবং দেশের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তারা আমাদের যা জানাচ্ছেন, সেটি বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। পদত্যাগ এবং বৈঠক বাতিলের বিষয়টি সংস্কার কমিশনের কার্যক্রমে কোনো প্রভাব ফেলবে না।"
২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুযায়ী, একজন কমিশনার এক মাস আগে নোটিশ দিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারেন। তবে, মইনুদ্দিন, জহুরুল এবং আছিয়া রাষ্ট্রপতির কাছে তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয়।