জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অটোপাশ দেওয়া হবে না: উপাচার্য
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো অটোপাশ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ।
তিনি বলেন, 'আমাদের চাপে রেখে ছাত্রদেরকে ব্যবহার করে যারা অটোপাশ আদায় করতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো অটোপাশ দেওয়া হবে না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অটোপাশ দিলে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে।'
বুধবার (৩০ অক্টোবর) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে, এখন এই শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন।'
প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, 'জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে ৬২ দিনের অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে, বাংলাদেশের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে এলোমেলো করে দেওয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ সমস্ত শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন। এদেশের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। তাদের কারিকুলামে কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা নেই। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর কারিকুলাম পরিবর্তন করে বিভিন্ন আইসিটি ও সফট স্কিল অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছি।'
তিনি আরও বলেন, 'জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রকার সিন্ডিকেট সহ্য করা হবে না।'
উপাচার্য বলেন, 'একটা সময় ছিল যখন বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মসংস্থানের জন্য লোকজন আমাদের দেশে আসতো। অথচ আজ আমরা সেই সব দেশ থেকে অনেক পিছিয়ে পড়েছি। গত দশকের এলোমেলো শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে আজ আমাদের এই অবস্থা। এর থেকে উত্তরণের জন্য ও গুণগত শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিতে রাত দিন কাজ করে যাচ্ছি।'
তিনি বলেন, 'জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক মানের ডাটা সেন্টার, সাইবার সেন্টার করার চিন্তাভাবনা করছি। এটা বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আসবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান বাড়বে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজগুলোতে মনিটরিং বাড়ানোর ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।'
উপাচার্য আরও বলেন, 'জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি মডেল ক্যাম্পাস তৈরি করারও পরিকল্পনা রয়েছে, যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আমরা সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করব।'
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর মো. লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।
৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় উপাচার্যের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা হয়। পরে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়।