১৫ বছর পর সরানো হলো চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি ফজলুল্লাহকে
চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম ফজলুল্লাহকে অপসারণ করা হয়েছে। একটানা ছয় মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক ১৫ বছর দায়িত্ব পালনের পর তাকে অপসারণ করা হয়।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগ পাস-২ শাখার উপসচিব মো. আব্দুর রহমানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে ফজলুল্লাহর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের পাশাপাশি অপসারণের কথা জানানো হয়। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর)।
একই প্রজ্ঞাপনে সংস্থাটির দৈনন্দিন কার্যক্রম সুচারুভাবে পরিচালনা এবং চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সরকার, চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশাকে তার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে সাময়িকভাবে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানানো হয়।
ফজলুল্লাহ চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে অবসর নেন ২০০০ সালে। এর ৯ বছরের মাথায় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ৬ জুলাই প্রথমবার চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে এক বছরের জন্য নিয়োগ পান তিনি। এরপর আরও এক বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
২০১১ সালে ঢাকা ওয়াসার আদলে চট্টগ্রাম ওয়াসাতেও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ তৈরি করা হয়। ওয়াসা বোর্ডও পুনর্গঠন করা হয়। তখন এমডি পদে নিয়োগ পান তৎকালীন চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলুল্লাহ। সেই থেকে এমডি পদে বারবার পুনরায় নিয়োগ পেয়ে এসেছেন তিনি।
দীর্ঘ দায়িত্ব পালনকালে ফজলুল্লাহ বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে। তার আমলে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য একের পর এক প্রকল্প নেওয়া হলেও কোনোটিই তিনি নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারেননি। প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়েছে দফায় দফায়।
আবার পানি চুরি, বছর বছর দাম বাড়ানো, অপচয় কমাতে না পারা, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ আসায় বারবার সমালোচিত হন আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ৮২ বছর বয়সী এই প্রকৌশলী। কিন্তু ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও সরানো হয়নি ফজলুল্লাহকে। তার পদত্যাগের দাবিতে দফায় দফায় আন্দোলন হলেও তিনি সরে যাননি। অবশেষে সরকারই তাকে সরিয়ে দিল।