হুমকি দিলেও বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি ও যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক
যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই আমদানি-রপ্তানি ও যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক ছিল।
এর আগে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে সনাতনী ঐক্য মঞ্চের উদ্যোগে বিক্ষোভ ও জমায়েত কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখান থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধের হুমকি দেওয়া হলেও মঙ্গলবার এ কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলেছে।
বেনাপোল শুল্ক ভবনের চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল গনি জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকেই বেনাপোল এবং পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি।
ভারত থেকে দেশে ফিরে আসা পাসপোর্ট যাত্রী শাহ জালাল জানান, সীমান্ত বন্ধের গুজব শুনে আতঙ্কে অনেক বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। তবে সীমান্তে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
ভারতীয় ট্রাকচালক পলাশ কুমার বলেন, 'আগের তুলনায় বর্ডারে কড়াকড়ি কিছুটা বেড়েছে। তবে মালামাল রপ্তানিতে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি।'
বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্য পেট্রাপোল বন্দরে খালাস করে ফিরে আসা ট্রাকচালক মিঠুন হোসেন জানান, তিনি স্বাভাবিক সময়ের মতোই পণ্য খালাস করে ফিরে এসেছেন। সেখানে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই, তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক কাজী রতন বলেন, 'স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সোমবার ভারত থেকে ২৪৩ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে এবং বাংলাদেশ থেকে ২০১ ট্রাক পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে।'
অন্যদিকে মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ২১৯ ট্রাক পণ্য বেনাপোলে প্রবেশ করেছে এবং ৬৮ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে বলে জানান তিনি।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি ইমতিয়াজ মো. আহসানুল কাদের ভূঞা জানান, দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপারও স্বাভাবিক রয়েছে।
'ভারতে যাওয়ার তুলনায় ফেরত আসা যাত্রীর সংখ্যা বেশি। যাত্রীদের কাছ থেকে জানা গেছে, ওপারে কোনো সমস্যা হয়নি.' বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। ওই সমাবেশের পরপরই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ এনে চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান।
পরে গত ২৫ নভেম্বর, সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরদিন মঙ্গলবার সকালে তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
২৬ নভেম্বর বিকেলে চট্টগ্রামের আদালতে চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময় দাসের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাইফুল ইসলাম আলিফ নামের একজন আইনজীবী।