বঙ্গোপসাগরের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বঙ্গোপসাগরকে সহযোগিতা ও টেকসই উন্নয়নের অঞ্চলে রূপান্তর করতে সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তৌহিদ হোসেন বলেন, "বঙ্গোপসাগরকে সংঘাত ও প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র থেকে সরিয়ে সহযোগিতা ও টেকসই উন্নয়নের অঞ্চলে রূপান্তর করার জন্য বিভিন্ন স্বার্থের সমন্বয় অপরিহার্য।"
আজ রোববার ঢাকায় আয়োজিত 'বঙ্গোপসাগর অঞ্চল পুনঃসংযোগ: স্বার্থের একত্রীকরণ অনুসন্ধান' শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তৌহিদ হোসেন।
সেমিনারটি বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এবং ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপিং ইকোনমি (আইডিই-জেইটিআরও) যৌথভাবে এর আয়োজন করে। এছাড়া এতে অর্থায়ন করেছে জাপান দূতাবাস।
তৌহিদ হোসেন বলেন, "বর্তমানে আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক শক্তিগুলোর নজরে এসেছে বঙ্গোপসাগর। বঙ্গোপসাগর আশেপাশের দেশ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম চালিকাশক্তি। এটি এর ক্রমবর্ধমান গুরুত্বকে প্রতিফলিত করার পাশাপাশি সহযোগিতা এবং প্রতিযোগিতার সম্ভাবনাকেও বাড়িয়ে তুলছে।"
বঙ্গোপসাগরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরে তৌহিদ বলেন, "বঙ্গোপসাগর ঐতিহাসিকভাবে সংযোগ, বাণিজ্য এবং সংস্কৃতির এক কেন্দ্রস্থল। আজও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত স্থান হিসেবে পরিচিত, যা দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত করেছে। বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ, গুরুত্বপূর্ণ শিপিং রুট এবং অর্থনৈতিক একীকরণের সম্ভাবনার কারণে এটি ভূ-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।"
বঙ্গোপসাগরের অপার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে একত্রিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা আরও বলেন, "কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা, একটি সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ এবং উদ্ভাবনী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা এই অঞ্চলের বিশাল সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারি, যা সব অংশীদার এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উপকারী হবে।"
এছাড়া বাংলাদেশের কৌশলগত ভূমিকা এবং আঞ্চলিক সংযোগতা ও বৈশ্বিক বাণিজ্যে গুরুত্বও তুলে ধরে তৌহিদ হোসেন বলেন, "এর কৌশলগত অবস্থান এবং ক্রমবর্ধমান শিল্পের কারণে বাংলাদেশ অনন্যভাবে একটি আঞ্চলিক ট্রানজিট হাব এবং বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে পারবে। এই সম্ভাবনাগুলো উন্মুক্ত করতে বাংলাদেশকে জরুরি চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে এবং উদীয়মান সুযোগগুলো গ্রহণ করতে হবে।"
অনুষ্ঠানে জাপানের বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত ইওওয়ামা কিমিনোরিসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।