এসএমসি'র ৫০ বছর পূর্তি: বছরে বাজারজাত করে দেড়শ কোটি প্যাকেট স্যালাইন
প্রতি বছর প্রায় ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন প্যাকেট খাবার স্যালাইন বাজারজাত করে এসএমসি। আজ এসএমসি'র প্রধান কার্যালয় একটি মিডিয়া ব্রিফিং-এ এমনটা জানান, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তসলিম উদ্দিন খান।
আগামী ২৫ জানুয়ারি (শনিবার) এসএমসি'র পথচলার ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি সপ্তাহব্যাপী এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করছে।
এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাহী বলেন, এই মুহূর্তে আমরা অনেকগুলো পণ্য বাজারজাত করছি। তবে যদি জানতে চাওয়া হয় আমাদের সব থেকে ইউনিক প্রোডাক্ট বা নাম্বার ওয়ান প্রোডাক্ট কোনটি তাহলে বলব আমাদের বাজারজাতকৃত খাবার স্যালাইন, ওরস্যালাইন এন। ডায়রিয়া এবং পানিশূন্যতা মোকাবিলায় আমরা প্রতিবছর প্রায় দেড়শ কোটি স্যালাইন বাজারজাত করি।
'আমাদের ওরস্যালাইন ব্যবহার করে শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমে গেছে। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি', যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন উদ্ভাবনী পণ্যের বিপণন ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি গত পাঁচ দশকে অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছে। সকল অংশীজনের নিরলস প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে এখন পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। দেশের আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির প্রায় অর্ধেক ব্যবহারকারী এসএমসি ব্র্যান্ডের গর্ভনিরোধক পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে। আশির দশকে ডায়রিয়া ছিল শিশুমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। এসএমসি নিজ ব্রান্ডের ওরস্যালাইন দেশজুড়ে সহজলভ্য করেছে। ফলে ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে এসএমসি মা, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্যে বিভিন্ন স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
এছাড়া এই মুহূর্তে এসএমসি হেড অফিস, ফ্যাক্টরি ও আঞ্চলিক অফিস মিলিয়ে কোম্পানিটিতে ৪ হাজার ৫০০ কর্মী রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
স্বাস্থ্য কর্মসূচি বাস্তবায়নের পাশাপাশি এসএমসি বিভিন্ন ধরনের জনস্বাস্থ্য পণ্য বাজারজাত করছে। এগুলোর মধ্যে ওরাল স্যালাইন, শিশু পুষ্টি পাউডার, ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক, কৃমিনাশক ট্যাবলেট, স্যানিটারি ন্যাপকিন, বেবি ডায়াপার, ফর্টিফাইড বিস্কুট অন্যতম।
প্রতিবছর ১৫০ কোটি ওরস্যালাইন প্যাকেট বাজারজাতের পাশাপাশি দেশের প্রায় ৮ লাখ দোকানে সরবরাহ নিশ্চিত করে এসএমসি।
সংবাদ সম্মেলনে তছলিম উদ্দিন খান আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এসএমসি সাফল্যের সাথে ৫০ বছরের পথচলা পূর্ণ করেছে। এই বিশেষ দিনটি দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য গর্বের এবং আনন্দের। এটি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে এসএমসি'র নিরলস প্রচেষ্টার ফসল। বাংলাদেশ সরকার, ইউএসএআইডি, মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শুভানুধ্যায়ী এবং এসএমসি'র পণ্য ও সেবাগ্রহীতা এবং সর্বোপরি সম্মানিত গ্রাহকদেরকে এসএমসি পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিবাদন ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে।
এসএমসি ও এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওয়ালিউল ইসলাম বলেন, এসএমসি'র সাফল্যের মূলে রয়েছে সুষ্ঠু প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও কর্মচারীদের নিরলস প্রচেষ্টা, কৌশলগত পরিকল্পনা, এবং সরকার ও উন্নয়ন অংশীজনদের সহযোগিতা। এসএমসি তার সাফল্যকে পাথেয় করে আগামী বছরগুলোতেও কর্মসূচি সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের নারী, শিশু এবং পরিবারের জীবনমান উন্নয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। এদেশের মানুষের কল্যাণে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অবিচলভাবে এসএমসি কাজ করে যাবে সকল অংশীজনের সহযোগিতা ও ভালোবাসা নিয়ে।
অনুষ্ঠান শেষে 'পঞ্চাশের উচ্ছ্বাসে, একসাথে আগামীতে' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এসএমসি'র ৫০ বছর পূর্তির লোগো উন্মোচন করা হয়।