জুলাই আন্দোলনের নৃশংসতা নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি প্রকাশ পাবে: ভলকার তুর্ক
জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনকালে ঘটে যাওয়া নৃশংসতার বিষয়ে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান মিশন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং এটি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি প্রকাশ করা হবে।
তিনি বুধবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভার পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে এই মন্তব্য করেন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বৈঠকের বিষয়টি জানিয়েছেন।
তুর্ক বলেন, প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে বাংলাদেশের সঙ্গে এটি শেয়ার করা হবে। এটি জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর থেকে প্রকাশিত হবে।
তথ্য অনুসন্ধানকারী দলটির দায়িত্ব ছিল ঘটনাগুলোর তথ্য সংগ্রহ করা, দায় নির্ধারণ করা, মূল কারণগুলো বিশ্লেষণ করা এবং বাংলাদেশকে অতীত মানবাধিকার লঙ্ঘন মোকাবিলা ও পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য প্রস্তাবনা দেওয়া।
ড. ইউনুস ছাত্রদের নেতৃত্বে হওয়া আন্দোলনের সময় সংঘটিত অপরাধগুলো তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি আরও বলেন, "ছয়টি প্রধান স্বাধীন কমিশনের প্রতিবেদনও একই সময়ে প্রকাশিত হবে এবং এই প্রতিবেদনগুলো একে অপরের পরিপূরক হবে।"
প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানের সহযোগিতা কামনা করেন। সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে হাজার হাজার নতুন শরণার্থী আগমনের কারণে সংকট আরও বাড়ছে।
তুর্ক পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জানান, তিনি এই বিষয়ে মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ দূত জুলি বিশপসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন।
মিয়ানমারে মানবাধিকার সংকটের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে উল্লেখ করে তুর্ক বলেন, সংকট সমাধান এবং শান্তি ও মানবাধিকারকে অগ্রাধিকার দিতে সমন্বিত প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তিনি মিয়ানমারের বিশেষ দূতের সঙ্গে কথা বলেছেন।
ড. ইউনুস মিয়ানমারের রাখাইন এলাকায় জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি নিরাপদ অঞ্চল গঠনের আহ্বান জানান, যাতে নতুন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আগমন রোধ করা যায়।
প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আসন্ন উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনের কথা উল্লেখ করেন, যা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এই মানবিক সংকটের দিকে।
তুর্ক ড. ইউনূসের সাথে সম্মত হন এবং বলেন, এমন একটি সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হারানো মনোযোগ ফিরিয়ে আনবে।
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক (সিনিয়র সচিব) লামিয়া মোরশেদ, জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) এম রিয়াজ হামিদুল্লাহসহ অন্যান্যরা।