১৩ ও ১৪তম গ্রেডের বিভিন্ন পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি, বাস্তবায়ন না হলে কর্মবিরতির হুমকি
বাংলাদেশ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ঐক্য পরিষদ রাষ্ট্রের বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তর এবং সংস্থার ১৩ ও ১৪ তম গ্রেডের পদগুলো ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছে।
সংগঠনটির নেতারা জানিয়েছেন, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে ঘোষণা না দিলে, ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবে তারা। এরপরও দাবি পূরণ না হলে, সারাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এই পর্যায়ের কর্মীরা কর্মবিরতিতে গিয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম অচল করে দেবেন।
সংগঠনটির মহাসচিব মো: বেল্লাল হোসেন শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে এই বৈষম্য দূর করার জন্য সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছে, তবে সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করতে হবে।
যে-সব পদগুলোকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পরিবর্তন করার দাবি জানানো হয়েছে, সেগুলো হলো প্রধান সহকারী, উচ্চমান সহকারী, উচ্চমান সহকারী কাম করণিক, হিসাবরক্ষক, ক্যাশিয়ার, সহকারী, সাটলিপিকার, হিসাবরক্ষক এবং অন্যান্য সমপর্যায়ের পদ।
এগুলো বর্তমানে ১৩ ও ১৪ তম গ্রেডে রয়েছে। ২০১৫ সালের পে স্কেলের আগে এগুলোকে তৃতীয় শ্রেণির পদ বলা হতো, তবে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ১০ম গ্রেডের পদ, যা দ্বিতীয় শ্রেণির পদের অন্তর্ভুক্ত।
বেল্লাল হোসেন জানান, যদি তাদের দাবি মানা না হয়, তবে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা করবেন এবং এরপর সারাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা কর্মবিরতির মাধ্যমে প্রশাসনিক কার্যক্রম অচল করে দেবেন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে বিভিন্নভাবে এই বৈষম্য নিরসনের দাবি জানানো হয়েছে, কিন্তু সরকার সাড়া দেয়নি। তাই সংগঠনটি কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি আদায়ে মাঠে নামতে বাধ্য হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রধান সহকারী ও উচ্চমান সহকারী সমপদগুলোকে প্রশাসনিক আদেশের মাধ্যমে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে বদল করা হয়, এবং এসব পদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। এরপর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, গণভবন, বঙ্গভবন এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে এসব পদ পরিবর্তন করা হয়।
সংগঠনের সভাপতি আবু নাসির খান বলেন, ২৯ বছর ধারে এসব পদে কর্মরতরা বৈষম্যের শিকার। বর্তমান সরকারের মূল উদ্দেশ্য ছিল বৈষম্য নিরসন, তবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৩ তম গ্রেডে ৩২ হাজার ৪৫২টি এবং ১৪ তম গ্রেডে ২৭ হাজার ৪১৪টি পদ রয়েছে, তবে ১০ম গ্রেডে ৭৪ হাজার ৯৩১টি পদ রয়েছে। তবে এই পদের জন্য কর্মী সংখ্যা অনেক বেশি। ১৩ তম গ্রেডে সবচেয়ে বেশি কর্মী কাজ করছেন।
মহাসচিব আরও বলেন, এছাড়া, বিভিন্ন পদে কর্মরতরা তাদের বেতনের সর্বোচ্চ ধাপে পৌঁছে গেলেও পরবর্তী ধাপে পদোন্নতি পাচ্ছেন না। তবে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির কোনো বাধা নেই।'
এদিকে, সংগঠনের দাবি মেনে না নেওয়া হলে, তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে।