এরকমই একটা ঘরে হয়তো আমার বাল্যবন্ধুকে আটকে রাখা হয়েছিল: ফারুকী
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/12/images_1.jpg)
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) টর্চারসেল (আয়নাঘর) দেখে নিজের বাল্যবন্ধুর নিখোঁজ হওয়া ও মৃত্যু নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
আজ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) নিজের ফেসবুকে আয়নাঘর পরিদর্শনকালীন কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছেন ফারুকী।
এর সঙ্গে তিনি লিখেছেন, ''এরকমই কোনো একটা ঘরে হয়তো আমার বাল্যবন্ধু সাজেদুল ইসলাম সুমনকে আটকে রাখা হয়েছিল। এইরকমই কোনো একটা ঘরে অজানা আশঙ্কায় সে কেঁপে কেঁপে উঠতেছিল। এইরকম একটা ঘরে বসেই হয়তো সে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে কাঁদতে কাঁদতে বলছিল 'আল্লাহ, তুমি আমারে এই বারের জন্য বাঁচাইয়া দাও। আমি আর রাজনীতি টাজনীতি করব না। আমার সন্তানের জন্য আমারে বাঁচাইয়া দাও। আমার মায়ের জন্য আমারে বাঁচাইয়া দাও'।''
তিনি আরও লেখেন, ''এরকমই একেকটা ঘরে আমরা সতেরো কোটি মানুষ আটকা ছিলাম ষোলো বছর। আর গোপনে বলতাম, আল্লাহ এই ডাইনির হাত থেকে আমাদের বাঁচাইয়া দাও।''
উপদেষ্টা লেখেন, ''সুমনের সাথে আমার শেষ কথা হয় উত্তরার এক হাসপাতালে লুকাইয়া থাকা অবস্থায়। ওর ভাগনে আবরারের একটা শ্যুট ছিলো আমার সাথে। স্পষ্ট মনে আছে ওর শেষ কথা, 'দোস্ত, আবরাররে তুই ইজি কইরা নিস। নাইলে অ্যাকটিং খারাপ করব'।''
তিনি বলেন, ''এমনই এক জালিমের শাসনে ছিলাম যে তোর জন্য, সুমন, একটা কথাও বলতে পারি নাই। পরে জানলাম মানুষরুপী জানোয়ার জিয়াউল আহসানের নির্দেশে তোরে ইনজেকশন দিয়ে মেরে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়।''
তিনি আরও বলেন, ''যে বাবার ঘরে ফিরে সন্তানের সাথে ভাত খাওয়ার কথা ছিলো তাকে এই ডাইনির দল শীতলক্ষ্যার মাছেদের খাবারে পরিণত করে। এই হায়েনাদের হয়ে যখন কেউ কথা বলতে আসে, আমার মাথায় রক্ত উঠে যায়। আমি আমার কমপোজার লুজ করি।''
প্রসঙ্গত, আজ রাজধানীর তিনটি এলাকায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাব ও ডিজিএফআইয়ের টর্চারসেল (আয়নাঘর) পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আরও ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।