নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় সৈকতে আলাদা জোন
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দেখতে আসা নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় বালুচরে আলাদা জোনের উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে ৬০০ ফুট দীর্ঘ ওই জোন উদ্বোধন করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ।
এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, "প্রশাসনের কামনা সমুদ্রের বিশালতা দেখতে আসা নারী ও শিশুরা বিশেষ সুরক্ষায় থাকুক। নারী শিশুদের সমুদ্র দর্শন ও স্নান নির্বিঘ্ন এবং আনন্দময় করতেই এ জোনের পথচলা। পরিবারের সাথে আসা নারী-শিশুরা চাইলে সৈকতের যেকোন স্থানে ভ্রমণ করতে পারে। কিন্তু যেসব নারী ও শিশু একলা এসে সৈকত দর্শন করে তাদের ঝঞ্ঝাটমুক্ত ভ্রমণ উপহার দিতেই আলাদা জোন করা। পর্যটনবান্ধব কক্সবাজার গড়ে তুলতে আমরা সবাই কাজ করছি। হয়তো এ ছোট ছোট উদ্যোগগুলো পর্যটনকে এগিয়ে নিতে বড় ভূমিকা রাখবে।"
তিনি আরো বলেন, "এই জোনে নারী ও শিশু তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। নির্বিঘ্নে সমুদ্রে গোসল করতে পারবে। পুলিশ ও সৈকতের কর্মীরা এই জোনের নিরাপত্তায় কাজ করবে।"
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, "সৈকতে বেশি ঝুঁকিতে থাকে নারী ও শিশুরা। এবার সেই ঝুঁকি কমবে। পর্যটকদের জন্য আগে থেকেই কাজ করছি। জনবল কম হলেও আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করে যাব।"
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম বলেন, "এ ধরনের উদ্যোগ পর্যটনকে আরও বেগবান করবে।"
দেখা যায়, লাবনী পয়েন্টের ঝিনুক মার্কেট সংলগ্ন এলাকা থেকে দক্ষিণে উর্মি রেস্টুরেন্টের শেষ মাথা পর্যন্ত লাল পতাকা দিয়ে ঘিরেছে প্রশাসন। দু'পাশে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। বীচ কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা মাইকিং করে জানাচ্ছে এই জোনে একক পুরুষ সদস্যের প্রবেশ নিষেধ।
সেসময় নির্ধারিত জোনে নারী ও শিশু সদস্যদের তেমন উপস্থিতি দেখা না গেলেও জোনের উত্তর ও দক্ষিণে প্রায় হাজার পাঁচেক নারী, শিশু ও পুরুষ পর্যটক সমুদ্র স্নান ও ঘোরাফেরা করছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সফরে আসা ঝুমা ইসলাম বলেন, "বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আমরা কক্সবাজার শিক্ষা সফরে এসেছি। এখন আমি নারী জোনে যাব আর আমার সহপাঠীরা থাকবে অন্য কোথাও। এটা কেমন দেখায়। তাই আমরা সবাই একসাথে জোনের বাইরে আছি।"
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) সৈয়দ মুরাদ ইসলাম, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার কামালসহ সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কক্সবাজার সৈকত কেন্দ্রিক একাধিক ঘটনা সারা দেশে তোলপাড় তুলেছে। সৈকতে নারী পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। এসব ঘটনা পর্যটনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলায় জেলা প্রশাসন বৈঠক বসে নানা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই একটি নারী ও শিশুদের জন্য আলাদা জোন ঘোষণা।
তবে সংশ্লিষ্টদের অভিমত, লাখো মানুষের উপস্থিতির স্থানে এভাবে আলাদা করে জোন করা নিরাপত্তাহীনতা রদের সঠিক উপায় হতে পারে না।