কমিউনিটি স্বাস্থ্যখাতে ৮৭ শতাংশ অর্থের যোগান দিচ্ছে সরকার
সরকার বর্তমানে দেশের কমিউনিটি স্বাস্থ্য খাতে গৃহীত কর্মসূচিতে ৮৭ শতাংশ তহবিল সরবরাহ করছে, বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের (প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিট, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ) প্রধান কারিগরি উপদেষ্টা এম এম রেজা।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগেরর উদ্যোগে ইউনাইটেড নেশনস পপুলেশন ফান্ড (ইউএনএফপিএ) এর সহযোগিতায় 'স্বাস্থ্য খাতে সেক্টর-ওয়াইড অ্যাপ্রোচ: বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা' শীর্ষক সেমিনারে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, "বাংলাদেশে বিশ্বের সাতটি দেশের মধ্যে একটি যারা কম খরচে ভালো স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন। ১৯৯৮ সালে সরকার প্রায় ১২৪টি আলাদা আলাদা স্বাস্থ্য প্রজেক্টকে একত্রিত করে হেলথ নিউট্রিশন অ্যান্ড পপুলেশন সেক্টর প্রোগ্রাম (এইচপিএসপি)) চালু করে। এই প্রোগ্রামে এক সময় সরকার ৬১ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ দিত। বর্তমানে ৮৭ শতাংশ অর্থের যোগান দিচ্ছে সরকার।"
এম এম রেজা বলেন, "১৯৯৮ সালে প্রোগ্রামটি ছিল ১১ হাজার ৫২০ কোটি টাকার। এতে সরকার দিত ৬১ শতাংশ টাকা। ২০০৩ সালে প্রোগ্রামটি ছিল ৩৭ হাজার কোটি টাকার। সেসময় এই প্রোগ্রামে সরকার দেয় ৭২ শতাংশ যোগান। ২০১১ সালে এটি ছিল ৫১ হাজার কোটি টাকার, যেখানে সরকার দেয় ৭৭ শতাংশ অর্থ। এরপর ২০১৭ সালের ৪র্থ প্রোগ্রামটি ছিল ১৪৬ হাজার ১২৩ কোটি টাকার। এতে সরকার ৮৭ শতাংস অর্থের যোগান দিচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন, এই প্রোগ্রামে এক সময় সরকার বাহিরে দেশি- বিদেশে দাতা গোষ্ঠী এবং এনজিও ৩৮ শতাংশ আর্থিক যোগান দিত। বর্তমানে তাদের মাত্র ১২ শতাংশ অনুদান দিতে হচ্ছে। এই খাতের মোট বরাদ্দকৃত অর্থের ৬১ শতাংশ দিয়ে ঔষধ কেনা, আর বাকি ৩৯ শতাংশ অর্থ দিয়ে আনুষঙ্গিক খরচ মেটানো হয়।
এম এম রেজা জানান, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের ৯০ শতাংশ নারী বর্তমানে নিকটস্থ কমিউনিটি ক্লিনিকে সহজেই স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পারছেন। এই সব কমিউনিটি ক্লিনিকে ৩০ ধরণের ঔষধ পাচ্ছেন গ্রামীন নারী-পুরুষ সকলেই। যেসব নারীরা মাধ্যমিক পযন্ত শিক্ষা গ্রহণ করেছেন তারা খুব সহজেই কোন পুরুষ সদস্যের সাহায্য ছাড়াই নিজে নিজে এই সেবা গ্রহণ করছেন।
"আমাদেরকে নারীদের স্বাস্থ্যসেবার প্রতি আরও জোর দিতে হবে, কারণ দেশের সকল স্তরের নারীরাই মূলত কম খাদ্য গ্রহণ করে। ফলে এখনো দেশের বিশাল একটি সংখ্যার শিশুরা অপুষ্ঠিতে ভুগে," যোগ করেন তিনি।
বর্তমানে দেশে ডায়রিয়া,কলেরা, ম্যালেরিয়া ইত্যাদির রোগগুলো নেই বললেই চলে, তবে দেশে দ্রুত গতিতে নগরায়নের ফলে শহরের মানুষ ক্যান্সার, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ইত্যাদি বড় বড় রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন এম এম রেজা।
"এ কারণে নগরায়ন এলাকার জনগণের স্বাস্থ্যসেবা খাত পুরোপুরি প্রাইভেট সেক্টরের হাতে না দিয়ে সমস্ত প্রাইভেট স্বাস্থ্যসেবাকে সরকার একটি রেগুলেশনের মাধ্যমে একত্রে আনা উচিত," বলেন তিনি।