বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে কক্সবাজার সৈকতে ভীড়
মহামারির বছরে নানা পাওয়া ও না-পাওয়ার মধ্যদিয়ে 'সমৃদ্ধ বাংলাদেশ'র স্বপ্ন জাগিয়ে কালের গহ্বরে হারিয়ে গেলো ২০২১ সাল। অনেক প্রাপ্তি, হতাশা, ক্লান্তি ও নানা ঘটন-অঘটনকে ছাপিয়ে শেষ হল আরো একটি বছর।
বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে হাজির হন প্রকৃতিপ্রেমী হাজারো মানুষ।
তবে, এবারো থার্টিফার্স্ট নাইটের কোনো আয়োজন নেই। কিন্তু নিয়মরক্ষায় ইনডোরে অনুষ্ঠান করছে তারকা হোটেলগুলো। তাই রাতের সৈকতে উল্লেখ করার মতো পর্যটক নেই।
কনকনে শীতেল আবহাওয়া থাকলেও বর্ষ বিদায়ের শেষ দিনে সূর্য লাল আভা ছাড়িয়ে বিদায় নিয়েছে। শনিবারের সূর্যোদয়ের মধ্যদিয়ে পথচলা শুরু হবে ২০২২ খিষ্টাব্দের। ৩৬৫ দিনের সফলতা-ব্যর্থতার হিসাব পেছনে ফেলে পরিচ্ছন্ন আগামীর প্রত্যাশায় ২০২২ সালকে স্বাগত জানিয়েছে সবাই। উন্মুক্ত কোন আয়োজন না থাকলেও নিজেদের মতো করে নতুন বছরকে বরণ করছে সব শ্রেণীর মানুষ।
করোনার চলমান ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন ও নানা কারণে থার্টিফার্স্ট নাইটের সব ধরণের আয়োজন এবারু বন্ধ রেখেছে সরকার। অন্য বছরের মতো তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস, কক্স-টু-ডে, সায়মন বিচ রিসোর্টসহ অন্য তারকা হোটেল গুলো স্ব-উদ্যোগেও অভ্যন্তরীণ অনুষ্ঠান করছে।
এদিকে, অনুষ্ঠান না থাকলেও পর্যটকে ভরা সৈকতসহ সর্বত্র সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশসহ অন্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রেখেছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম।
হোটেল-মোটেল জোনের সী-নাইট হোটেলের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম ফরাজী বলেন, বিগত বছরগুলোতে শেষ দিন সারা দেশ থেকে লোকজন কক্সবাজার সৈকতে ছুটে আসতেন। অনুষ্ঠান না থাকলেও বিগত সময়ের মতো থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপনে সৈকতে কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। এতে যোগছিল স্থানীয়দেরও। কিন্তু এবার আগের মতো পর্যটক উপস্থিতি কম বলে মনে হয়েছে। তবে স্থানীয় নারী-পুরুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।
শুক্রবার বিকেলে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে, সারা দেশ থেকে আসা পর্যটকের পাশাপাশি স্থানীয় ভ্রমণপ্রেমীরাও আসে সৈকতে। শীতের হিমেলতা বেশি থাকায় তেমন কেউ সমুদ্রে নামেনি। তবে, কেউ কেউ জেডস্কি নিয়ে ঢেউ কেটে সাগরে ছুটে চলতে দেখা যা। অন্য সবাই বালুচরে দাঁড়িয়ে সাগরের গর্জন আর সূর্যাস্ত উপভোগ করছেন।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের সদর রেঞ্জার সমীর রঞ্জন সাহা পরিবার নিয়ে বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে সৈকতে এসেছেন। চাকুরীর সুবাদে কক্সবাজারে অবস্থান করায় বিগত বছরের ন্যায় এবারও বছরের শেষ সূর্যাস্তের স্বাক্ষী হতে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে বালিয়াড়িতে যান। এটি খুবই উপভোগ্য বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইটে দেশের সবচেয়ে বড় মিলন মেলা বসত কক্সবাজার সৈকতে। নানা অনুষ্ঠানে বাণিজ্য হতো শত কোটি টাকার। কিন্তু এবারসহ গত কয়েক বছর এর ব্যত্যয় ঘটেছে। এরপরও নতুন বছর বরণ ও বর্ষ বিদায়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস আলোকিত করা হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানান, অনুষ্ঠান না থাকলেও পর্যটন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশসহ একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সাদা পোশাকেও দায়িত্ব পালন করছে। যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করছে।