নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে যা দেখছি
সকাল নয়টায় পৌঁছালাম চাষাড়া মোড়ে। এবিসি স্কুল কেন্দ্রে (১২ নম্বর ওয়ার্ড) তখন পর্যন্ত নারী ভোটারের উপস্থিতি বেশি দেখিনি। বলা যায় পুরুষ ভোটারের অর্ধেক ছিল নারী ভোটার । নারী ভোটার বুথের ইভিএমে সময়ও লাগছিল বেশি। কারণ ফিঙ্গার কম ম্যাচ করছিল। তাই একেকটি ভোটের জন্য সময় লাগছিল প্রয়োজনের তুলনায় বেশি।
কেন্দ্রের ভোটার শান্তি চৌধুরী। নিজেকে পরিচয় দিলেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বলে। বলছিলেন, "আমি আমার পছন্দের মেয়র প্রার্থীকে ভোট দিলাম কিন্তু সবুজ বাটন (ওকে বাটন) জ্বলে ওঠার আগেই আমাকে বলা হলো ভোট হয়ে গেছে আপনার। কাউন্সিলর ভোটের বেলায় কিন্তু তা হয়নি।"
পরে অবশ্য প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। অফিসারও নিশ্চিত করেছেন, তার (শান্তি চৌধুরী) ভোট কাস্ট হয়েছে।
জানতে পারলাম তৈমুর আলম খন্দকার যিনি হাতি মার্কায় নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। তাকে ধরা হচ্ছে একজন বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে। তিনি নিজ কেন্দ্র ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় (জামতলা কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে) ভোট দিয়েছেন সকাল সাড়ে নয়টায়। অন্যদিকে সেলিনা হায়াত আইভি নির্বাচন করছেন নৌকা মার্কা নিয়ে। তিনি ভোট দিয়েছেন সকাল ৮টা নাগাদ নিজ কেন্দ্র দেওভোগের শিশুবাগ স্কুলে।
মরগান উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র যেটি আইভির বাসার কাছে সেখানে দেখলাম কর্মী, সমর্থক, নিরাপত্তা বাহিনী ইত্যাদি সবমিলিয়ে সারাক্ষণই হাজার লোকের সমাগম। সেখানে কিছুক্ষণ পরপরই স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যুবকরাই বেশি আইভির সমর্থক।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন মানে নাসিকের ২৭টি ওয়ার্ড, ভোটকেন্দ্র ১৯২টি, ভোটকক্ষ মোট ১ হাজার ৩৩৩টি। মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লক্ষ ১৭ হাজার ৩৬১ জন। প্রায় প্রতিটি ভোটকেন্দ্র লাগোয়া বিরিয়ানী, তেহারীর দোকান দেখছি। সেখানে লোকজন খাওয়াদাওয়া করছে। আমার মনে হচ্ছে এখানকার পরিবেশ অনেকটা পুরান ঢাকার মতো। বেশ একটা উৎসবমুখর পরিবেশ। পোস্টার-প্লাকার্ডে সয়লাব পুরো নারায়ণগঞ্জ। লোকজন হাঁটছে, চলছে. আলাপ-আলোচনায় মেতে উঠছে। বড় কোনো ঝুট-ঝামেলা এখনো নজরে আসেনি। কেবল জানতে পেরেছি ২২ নম্বর ওয়ার্ডের এক কেন্দ্রে আইভি ও তৈমুর পক্ষীয় সমর্থকদের মধ্যে অল্প হাতাহাতি হয়েছে সাড়ে ১১টা নাগাদ। আর সেটা বড় ঘটনায় গড়ায়ওনি।
তৈমুর আলম খন্দকারের সমর্থকদের আনাগোনা বেশি চোখে পড়ছে না। তবে ভোটকেন্দ্রে তার এজেন্টরা সক্রিয় আছেন। কিন্তু বাইরে তেমন শোরগোল নেই।
এই রিপোর্ট যখন লিখছি, তখন ঘড়িতে প্রায় দেড়টা বাজে এখন। আমি আছি পাইকপাড়া সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। এটি পুরুষ ভোটার কেন্দ্র। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোক দেখতে পাচ্ছি। পরিস্থিতি শান্তই।
এবারের নাসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৭ জন। আইভি, তৈমুর ছাড়া আরো আছেন খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন (দেয়ালঘড়ি মারকা), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মো. মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ), বাংলাদেশ কল্যাণ পারটির মো. রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি) এবং স্বতন্ত্র প্রারথী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া মার্কা)।