আরো একটি সমুদ্রগামী জাহাজের নিবন্ধন নিল মেঘনা গ্রুপ
বাংলাদেশি পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজের বহরে যুক্ত হয়েছে আরো একটি নতুন জাহাজ। দেশের বৃহৎ শিল্প গ্রুপ মেঘনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মার্কেন্টইাল শিপিং 'মেঘনা প্রোসপার' নামে বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজটির নিবন্ধন নিয়েছে।
জাহাজটির ধারণক্ষমতা ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। এটি ১৬ বছরের পুরোনো জাহাজ। এতে বিনিয়োগের পরিমাণ ১৮.৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি নৌ বাণিজ্য দপ্তর মেঘনা প্রোসপার জাহাজটির নিবন্ধন দিয়েছে। নতুন এই জাহাজটির মাধ্যমে মেঘনা গ্রুপের বহরে যুক্ত হয়েছে ১৬টি জাহাজ। এর মধ্যে ১৪টি বাল্ক ক্যারিয়ার। ২টি অয়েল/ ক্যামিকেল ট্যাংকার। মেঘনা গ্রুপ তাদের নিজেদের পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি ভাড়ায় প্রায় ৪০ ভাগ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পণ্য পরিবহন করে।
নৌ বাণিজ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন মোঃ গিয়াসউদ্দিন আহমেদ টিবিএসকে বলেন, "বৃহস্পতিবার মেঘনা প্রোসপার নামে একটি বাল্ক ক্যারিয়ারের নিবন্ধন দিয়েছি আমরা। কোন প্রতিষ্ঠান আবেদন করলে আমরা দিনে দিনে জাহাজের নিবন্ধন দেওয়ার চেষ্টা করি।"
তিনি বলেন, গত দুই বছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক জাহাজ দেশীয় বহরে যুক্ত হয়েছে। বেসরকারি উদ্যোক্তারা যাতে এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হয় সেজন্য সরকার ফ্ল্যাগ প্রোটেকশন আইন করেছে । এই আইন শতভাগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে নৌ বাণিজ্য দপ্তর। এই খাতে এখনো বিনিয়োগের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে আমদানি-রপ্তানির প্রায় ২০ ভাগ পণ্য দেশীয় মালিকানাধীন জাহাজের পরিবহন করার সক্ষমতা রয়েছে।
মেঘনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মার্কেন্টাইল শিপিং এর প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আবু তাহের বলেন, মেঘনা প্রোসপার নামের জাহাজটি আগামী ১ মাসের মধ্যে সমুদ্রে ভাসবে। আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে মেঘনা গ্রুপ ২০১০ সাল থেকে জাহাজ পরিচালনায় যুক্ত হয়। মেঘনা গ্রুপের বহরে আছে বাংলাদেশি পতাকাবাহী ১৬টি জাহাজ। ২০২২ সালে আরো ৬টি বাল্ক ক্যারিয়ার বহরে যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে মেঘনা গ্রুপ।
নৌ বাণিজ্য দপ্তরের তথ্যমতে, ২০১২ সালের আগে বাংলাদেশি পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা ছিলো ৭২টি। ২০১২ সালে এই সংখ্যা নেমে আসে ৩৫ এ। ২০১৮ সালে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬টিতে। বর্তমানে এই সংখ্যা ৮১।
এর মধ্যে কেএসআরএম গ্রুপের ২৩টি , মেঘনা গ্রুপের ১৬টি, আকিজ গ্রুপের ১০টি , বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ৮টি, কর্ণফুলী গ্রুপের ৬টি, বসুন্ধরা গ্রুপের ৪টি, ভ্যানগার্ড মেরিটাইম লিমিটেডের ৫টি, ওরিয়ন ওয়েল এন্ড শিপিং লিমিটেডের ১টি সহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মোট ৮১টি জাহাজ রয়েছে।
মেঘনা গ্রুপের বহরে থাকা বাল্ক ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ মূল্য ৩৬ মিলিয়ন ইউএস ডলার। ছোট-বড় জাহাজ হিসেবে প্রতিটির গড় মূল্য ২৫ মিলিয়ন ডলার। সেই হিসেবে ১৬টি জাহাজে বর্তমানে মেঘনা গ্রুপের বিনিয়োগ ৪০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার বলে জানিয়েছে মার্কেন্টাইল শিপিং এর প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আবু তাহের।