আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বিনিময়কে আনুষ্ঠানিক রূপ দিতে চলেছে বাংলাদেশ-ভারত
ইন্ডিয়ান এনার্জি এক্সচেঞ্জের (আইইএক্স) মাধ্যমে ভারতের সাথে আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বিনিময়ের পরিকল্পনা বিবেচনা করছে বাংলাদেশ সরকার।
এই পদক্ষেপের ফলে বিদ্যুৎ বাণিজ্যকে আনুষ্ঠানিক করার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ বিনিময়ের সুযোগ বাড়াবে। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে উঠে আসে এই তথ্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ভারতীয় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। ২০২০-২১ সালে ভারত থেকে ৪৭১২.৯১ টাকার বিদ্যুৎ কেনে বাংলাদেশ, যা এর আগের বছরের তুলনায় ১৭.৩১ শতাংশ বেশি।
বর্তমানে নেপাল ও ভুটান আইইএক্সের মাধ্যমে ভারতের সীমান্ত জুড়ে বিদ্যুৎ ক্রয় ও বিক্রয় করে। বাংলাদেশ এখনো এর অংশ না হওয়ায় চুক্তির ভিত্তিতে ভারতীয় বিদ্যুৎ কেনে।
আইইএক্সে যোগদানের মাধ্যমে দেশগুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে তাদের চাহিদা এবং সরবরাহের অবস্থান অনুসারে বাণিজ্য করতে পারে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের জন্য আলোচনায় নিযুক্ত হয়েছে দুই দেশের ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশ না করার জন্য একজন ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তা বলেন, "বাংলাদেশে যেখানে কয়লা এবং ডিজেল ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়, সেখানে ভারতীয় বিদ্যুৎ একটি স্বল্পমূল্যের বিকল্প। দেশটির সরকার ডিজেল ব্যবহারকারী বেসরকারি উৎপাদনকারী কোম্পানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করে উচ্চ ভর্তুকি দিচ্ছে।"
বাংলাদেশের আঞ্চলিক ইলেকট্রিসিটি ট্রেডের পরিচালক এ কে মাহমুদের একটি উপস্থাপনা অনুসারে, ভারত থেকে প্রবাহিত বিদ্যুতের দাম প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় ৫.৮ টাকা, যেখানে ডিজেল ব্যবহারকারী বেসরকারি উৎপাদকদের ধার্য করা বিদ্যুতের দাম ৫২.৮ টাকা।
ইউক্রেন যুদ্ধের পরে অপরিশোধিত ক্রুড সরবরাহে চলমান সংকট ডিজেল-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলোর পর্যাপ্ত সরবরাহ পেতে এবং বর্ধিত দামের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এক্ষেত্রে কাজে আসবে আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ প্রবাহ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকার জন্য ক্রস-বর্ডার এক্সচেঞ্জ বেছে নেওয়া সহজ হবে না, কারণ বেসরকারী বাজারের একটি অংশ হারানোর আশঙ্কায় এই পরিকল্পনা প্রতিহত করছে।
এই বিনিময় প্রক্রিয়ায় প্রাথমিকভাবে ভারত থেকে তাপ বিদ্যুৎ সরবরাহের উপর ফোকাস করা হবে। কিন্তু ক্রস-বর্ডার মেকানিজম বাংলাদেশকে ভবিষ্যতে আরও সবুজ শক্তি ব্যবহারের সুযোগ দিবে। এই মেকানিজম চালু হলে ঢাকা ভারত থেকে সৌরবিদ্যুৎ এবং ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ চাইতে পারে।
তবে, শুরুতে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদার একটি ছোট অংশ পূরণ করবে ভারতীয় বিদ্যুৎ।
ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান আন্তঃদেশীয় এইচভিডিসি ট্রান্সমিশন লিঙ্কটি ৭০ মেগাওয়াটের অতিরিক্ত সরবরাহ পরিচালনা করতে সক্ষম যাতে ভারতীয় বিদ্যুৎ প্রবাহের জন্য যথেষ্ট জায়গা থাকে।
এক্সচেঞ্জ মেকানিজম বাড়ার সাথে সাথে পরিকাঠামো বাড়াতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
- সূত্র- টাইমস অফ ইন্ডিয়া