‘এয়ারপোর্ট রোডে কি ভালো কোনো ওয়াশরুম আছে?’
'এয়ারপোর্ট রোডে কি ভালো কোনো ওয়াশরুম আছে?' সুদীর্ঘ জ্যামে বসে এভাবেই নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে স্ট্যাটাস দেন নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী।
তার মতোই সকাল থেকেই তীব্র জ্যামে ভোগান্তিতে পড়েন উত্তরা থেকে ঢাকার দক্ষিণে যাত্রা করা মানুষ। মেইন রোডের এক পাশে সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে বাস, প্রাইভেট কারসহ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানও।
ঢাকার এক প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নাদিয়া নায়লা জানান, খিলক্ষেত থেকে তিনি মগবাজারের উদ্দেশে সকাল ৭.৩০ টায় যাত্রা করেন। দুর্বিষহ জ্যামের কারণে ১১ টারও পর এসে পৌঁছান গন্তব্যে। এসে দেখেন, মগবাজারেও বাসের দীর্ঘ সারি।
জ্যামের ভোগান্তির পেছনে অপরিকল্পিত নগরায়নই মূল কারণ উল্লেখ করে ফেসবুকে লিখেছেন কলামিস্ট শরিফুল হাসান। তিনি লিখেন, 'ঢাকা মানেই নিত্য দুর্ভোগ আর যানজটের দুঃসহ এক জীবন। বছরের পর বছর অপরিকল্পিত নগরায়নের মাধ্যমে এই ঢাকাকে আমরা হত্যা করেছি। যে ভিআইপিরা ভেবেছিল নিজের কোটি টাকার দামী গাড়ি থাকলেই হলো এখন তারাও রাস্তায় আটকে থাকেন, থাকেন লাখ লাখ গাড়িওয়ালা। আফসোস পরিকল্পনা করে নতুন একটা রাজধানী গড়ার বদলে মৃত এই শহরেই আমরা রোজ বাঁচার বৃথা এক যুদ্ধ করছি!'
তিনি আরও লিখেন, 'আফসোস যানজট বা নগরের সমস্যাগুলো সমাধানের যথাযথ উদ্যোগ না নিয়ে আমরা চাইছি সবাই এগুলোতেই অভ্যস্ত হয়ে যাক। অথচ কোথাও রাজধানী সরাতে হবে নতুবা গণপরিবহন ব্যবস্থা ঠিক করতে হবে- এই দুই ছাড়া এই শহরকে বাঁচানোর কোন পথ নেই।'
ঢাকার আজকের জ্যাম নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন আরও অনেকেই। মো. শরিফুল ইসলাম সোহেল নামক এক ফেসবুক ব্যবহারকারী বলেন, গত কয়েকদিনের মধ্যে এত বড় জ্যাম আর দেখা যায়নি।
আসলে সকালের এই তীব্র যানজটের কারণ বিমানবন্দর সড়কের একটি দুর্ঘটনা।
পুলিশের মহাখালী ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার আশফাক আহমেদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "ভোর সাড়ে তিনটার দিকে বিজয় সরণিতে বাস ও কাভার্ড ট্রাকের মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার কারণেই রাস্তার একটা পাশ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।"
সকাল সোয়া ৯টার দিকে সড়ক থেকে কাভার্ড ভ্যানটি সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে গাড়ির চাপ তাতে বিন্দুমাত্র কমেনি।
দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত যানটি সরিয়ে নেওয়ার ঘণ্টা দুয়েক পরেও মানুষজনকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে যেতে দেখা গেছে।
অনেকে আবার বিজয় সরণী, মহাখালির দিকের সড়ক আজ এড়িয়ে যাবার পরামর্শ দিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
এইচ এম ফরহাদ হোসেন নামক আরেকজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেন, মিরপুরেও প্রচুর জ্যাম পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদেরকে। কালশী থেকে ইসিবি যেতে তার ৪৪ মিনিট লেগেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।