আমদানি কমাতে জাহাজ শিল্পে সাড়ে চার শতাংশ সুদে ঋণ
জাহাজ নির্মাণ শিল্পের উন্নয়ন, পরিচালনা ও বিকাশের মাধ্যমে আমদানি নির্ভরতা কমাতে এ খাতে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঋণগ্রহীতারা মাত্র সাড়ে চার শতাংশ সুদ হারে ঋণ পাবেন।
বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংক ও গ্রাহকের সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের সীমা নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। সেই ঋণ পরিশোধে তিন বছর গ্রেস সময়সহ মোট ১২ বছর সময় বরাদ্দ থাকবে। এ খাতের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গঠিত ২ হাজার কোটি টাকার পুনঃতহবিল স্কিমের আওতায় সকল তফসিলি ব্যাংক অর্থ সংগ্রহ করে তা ঋণ হিসাবে বিতরণ করতে পারবে।
ব্যাংক পর্যায়ে সুদের হার হবে ১ শতাংশ। তবে গ্রাহককে ঋণ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারীর মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, জাহাজ নির্মাণ শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০২১ এর লক্ষ্যকে ধারণ করে ব্যাংকগুলো স্কিমের অর্থ সংগ্রহ করে ঋণ বিতরণ করবে। জাহাজ শিল্পের টেকসই উন্নয়ন, রপ্তানি আয় ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং আমদানি নির্ভরতা কমাতে বিশেষ গুরুত্ব দিবে। পুনঃঅর্থায়ন ঋণ বিতরণে আগ্রহী ব্যাংকসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংকের অফ-সাইট সুপারভিশন বিভাগের সাথে অংশগ্রহণ চুক্তি করে স্কিমের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে।
আর এ স্কিমের আওতায় ব্যাংকসমূহ ১ বছর মেয়াদে চলতি মূলধনে ঋণ বিতরণ বা বিনিয়োগ করতে পারবে। ব্যবসায়িক লেনদেন সন্তোষজনক হলে তা নবায়ন করতে পারবে। তবে, নবায়নের মাধ্যমে কোন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৩ বছরের জন্য এ সুবিধা পাবেন।
ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কিস্তিতে ব্যাংকসমূহ মঞ্জুরিকৃত ঋণ বা বিনিয়োগ বিতরণ করতে পারবে। সর্বনিম্ন তিনটি কিস্তিতে দিতে হবে। কিন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব বিবেচনায় চলতি মূলধন বাবদ প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত সুবিধার সময় হ্রাস বা বৃদ্ধি করতে পারবে।
প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে, কোন ব্যাংক এ তহবিলের আওতায় বিতরণকৃত ঋণ বা বিনিয়োগ মনিটরিং পরিচালন করার পরেও ঋণের অর্থ সদ্ব্যবহারে ব্যর্থ হলে পুনঃঅর্থায়ন বাবদ নেওয়া অর্থের উপর ২ শতাংশ হারে জরিমানা করা হবে এবং তা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চলতি হিসাব থেকে আদায় করা হবে। আর মঞ্জুরিকৃত ঋণসীমা অতিক্রম করলে প্রতি ত্রৈমাসিক শেষে পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে ঋণগ্রহীতা তা পরিশোধ বা সমন্বয় করবে। এটি করতে ব্যর্থ হলে সীমাতিরিক্ত ঋণদায়ের উপর ব্যাংক প্রচলিত হারে সুদ আরোপ করবে এবং তা গ্রাহকের দায় হিসেবে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ তখন সুদের হার সাড়ে ৪ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ হয়ে ৯ শতাংশ হবে। আর কোন খেলাপি উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী এ ঋণের সুবিধা পাবেন না। আর এ স্কিমের আওতায় ঋণ নিয়ে কোনভাবেই তা পূর্বের ঋণ পরিশোধ বা সমন্বয় কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ১২০টি শিপইয়ার্ড রয়েছে। যেগুলোতে জাহাজ নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ হচ্ছে। শিপইয়ার্ডগুলোতে এখন প্রায় ৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে তা বেড়ে ১ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। এ খাতের সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে এখন নতুন করে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়েছে।