হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আজ ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে। শিগগিরই তার করোনারি এনজিওগ্রাম টেস্ট করা হবে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিলে তিনি সেরে উঠবেন বলে বিশ্বাস তার।
"এনজিওগ্রামসহ আরও কিছু টেস্ট করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা," বলেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে বলেন, "খালেদা জিয়া মধ্যরাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে তার গুলশানের বাসা থেকে রাত ২টা ৫৫ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।"
এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের অন্যান্য নেতারা হাসপাতালে আসেন বলে জানান শায়রুল কবির খান।
মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোগ নির্ণয়ের পর তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
গত এপ্রিলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
তিনি সর্বশেষ গত বছরের ১৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন যেখানে তার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে। লিভার সিরোসিস সমস্যার কারণে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে ভোগেন তিনি। গত বছরের ২৮শে নভেম্বর চিকিৎসকরা জানান, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন।
৮১ দিন হাসপাতালে থাকার পর চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি তিনি বাড়ি ফেরেন।
এদিকে, বিদেশে তার উন্নত চিকিৎসার দাবীতে এ সময়জুড়ে নানা কর্মসূচী পালন করেছে বিএনপি।
সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার পরিবার থেকে এ বিষয়ে আবেদন করা হলে আইনে সেই সুযোগ নেই বলে সরকার জানিয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেয়। সেসময় খালেদাকে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে, একই বছর অন্য একটি দুর্নীতির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
করোনভাইরাস চলাকালে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার তার কারাদণ্ড স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়। তাকে এই শর্তে মুক্তি দেওয়া হয় যে তিনি তার গুলশানের বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ ছেড়ে যাবেন না।