করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবায় বাড়ি দিতে চান ন্যানসি
নিজেদের বাড়ি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যানসি। বাড়িটির অবস্থান নেত্রকোনা জেলা শহরের পাশেই। দেড় একর জমির ওপর নির্মিত সাড়ে ৫ হাজার স্কয়ার ফুটের দুই তলা ওই বাড়ি মানবিক বিবেচনায় রোগীদের আইসোলেশনে অথবা চিকিৎসকের আবাসনের কাজে লাগাতে চান বলে জানান তিনি।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে ন্যানসি বলেন, যদিও আমাদের তিন ভাইবোনের বাড়ি, তবে ওখানে এখন কেউ থাকে না। আমি ময়মনসিংহে শ্বশুরবাড়িতে থাকি। বাড়িটি পুরোপুরি খালি পড়ে আছে। এদিকে নেত্রকোনা-জামালপুরে করোনার প্রকোপ বেড়েছে। তাই আমার পক্ষ থেকে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসককে বলেছি, করোনা সংক্রান্ত যেকোনো কাজে চাইলে আমাদের বাড়িটি ব্যবহার করতে পারেন তারা।
সম্পূর্ণ মানবিক কারণেই বাড়িটি ব্যবহার করতে দিতে চান ন্যানসি। রোগীই শুধু নয়, চাইলে ডাক্তারদের থাকার জন্য এটি কাজে লাগানো সম্ভব বলে জানান তিনি।
ন্যানসি বলেন, যেসব ডাক্তার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সেবায় নিয়োজিত, তাদের নিজ বাসায় ফেরার সুযোগ নেই। এদিকে নেত্রকোনায় ভালো মানের কোনো হোটেলও নেই। তাই জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেছি জনস্বার্থে চিকিৎসা সেবায় কাজে লাগানোর জন্য বাড়িটি দিতে চাই।
জেলা প্রশাসক তার এই আগ্রহকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন ন্যানসিকে।
ন্যানসি আরও বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে ব্যবহার করতে চাইলে আমি মাত্র একদিন সময় নেব। কারণ অনেকদিন সেখানে কেউ থাকে না। বাড়িটিকে তাই পরিষ্কার করে থাকার উপযোগী করে তুলতে হবে। এ ছাড়া যদি অন্য কোনো সাপোর্ট লাগে, সেটাও দিতে পারব।
এদিকে ময়নমনসিংহে শ্বশুরবাড়িতে বেশ ভালো সময় কাটছে ন্যানসির। তিনি বলেন, সারা দিন ঘরে থাকি। তবে আমার সন্তান ও শ্বশুরবাড়ির মানুষদের সঙ্গে দারুণ সময় কাটছে। নিয়ম করে মেয়েদের নিয়ে রাতে গানের রেওয়াজ করছি। সময় পেলে মুভি দেখছি, সিরিজ দেখছি, শাশুরির সঙ্গে গল্প করছি, বই পড়ছি। এমনকি মোবাইলে গেমও খেলি মাঝেমধ্যে! তবে রান্নাও করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে ভালো সময় কাটছে। তবে করোনাভাইরাস নিয়ে অন্য সবার মতো আমিও একটু চিন্তায় আছি। জানি না সামনে কি হবে। তবে আশাবাদী হতে দোষ কোথায়?
কোরোনাভাইরাসের এই সময়ে হঠাৎ করেই কোরিয়ান সিনেমা ও সিরিজের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন ন্যানসি। বলেন, আগে অতটা দেখতাম না। কিন্তু অল্প বিস্তর দেখা শুরু করার পর থেকে বেশ আগ্রহ তৈরি হয়েছে। বেশ মজা পাচ্ছি সিনেমাগুলো দেখে।
চারবার জাতীয় পুরস্কার পাওয়া এই শিল্পী নিজের গান নিয়ে বলেন, কম গান করছি বললে ভুল হবে। গান ভালোই করছি। তবে সেগুলো কম ফোকাস হচ্ছে। কারণ এই সময় মানুষ 'ভাইরাল' হওয়া শিল্পীদের নিয়ে বেশি ব্যস্ত। তাছাড়া জায়গাটাও ছোট হয়ে এসেছে। এখন একটা সিনেমার গান হলে অর্ধেক গাওয়ানো হচ্ছে ভারতীয় শিল্পীদের দিয়ে, বাকিটা এই দেশের। সব মিলিয়ে গানের পরিবেশটা ঠিক অনুকূল নয়।
তবে তিনি বরাবরই আশবাদী। বলেন, এ দিন থাকবে না। সামনে নিশ্চয় আমাদের জন্য সুদিন আসবে। ততদিন পর্যন্ত আমাদের সুস্থ থাকতে হবে। ভালো থাকতে হবে।
সুস্থ ও ভালো থাকার জন্য সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেন জনপ্রিয় এই শিল্পী।