তিন রকস্টারের আহ্বান
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশে চলছে সাধারণ ছুটি। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে নিজেকে ও পরিবার পরিজনকে সুরক্ষিত রাখার আহ্বান পৃথিবীর সব দেশের বিভিন্ন মাধ্যমের তারকা-মহাতারকারা নিয়মিত জানিয়ে যাচ্ছেন। দায়িত্ববোধের প্রশ্নে ছাড় দেননি বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের তারকারাও।
ফেসবুকে নিজ নিজ ব্যান্ডের অফিসিয়াল পেজে প্রকাশ করা 'নগরবাউল'-এর জেমস, 'মাকসুদ ও ঢাকা'র মাকসুদ এবং 'ওয়ারফেজ'-এর টিপুর এমনই আহ্বান হাজির করা হলো এখানে। বলে রাখা ভালো, জেমস বাংলায় লিখে প্রকাশ করলেও মাকসুদ লিখেছেন ইংরেজিতে। তার দীর্ঘ লেখাটির সারসংক্ষেপ অনুবাদ করা হয়েছে। অন্যদিকে টিপু দিয়েছেন ভিডিও বার্তা।
এবারের লড়াইটা আলাদা: জেমস
বাঙালি চাইলেই একতাবদ্ধ হয়ে লড়ে যেতে পারে যে কোনো অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে তার প্রমাণ আমরা ৭১-এ দিয়েছি। কিন্তু এবারের লড়াইটা আলাদা, তাই লড়তে হবে একাই!
চলুন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখি এবং সামনের কয়েকটি দিন ঘরেই থাকি!
প্রকৃতির প্রতিশোধ: মাকসুদ
দীর্ঘকাল ধরে আমরা জননী পৃথিবীর ওপর নির্দয় নিপীড়ন চালিয়েছি, তাকে কলুষিত করেছি, ধর্ষণ করেছি, পরিবেশ করেছি ধ্বংস, পুকুর ও হ্রদ দখল ও ভরাট করে বানিয়েছি দালান, করেছি কুৎসিত দুঃশাসন।
আমাদের লিপ্সা এতই তীব্র ও মজ্জাগত হয়ে উঠেছে যে, আমরা এসব কাণ্ডকে স্বাভাবিক হিসেবেই ধরে নিয়েছি, আর ভেবে নিয়েছি, আমরা এভাবেই চলব। এখন সময় এসেছে নিজেদের জীবন দিয়ে সেই পাপের প্রায়শ্চিত্য করার।...
এমন কোনো এয়ারক্রাফট নেই যেটিতে চড়ে আমরা এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে আমাদের কোনো 'নিরপদ প্রবাস জীবনে' পালিয়ে যেতে পারব।
জননী পৃথিবী ইতোমধ্যেই নিজেকে সাফ করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। নিজেদের 'ব্যস্ত কর্মসূচী'র চাপে আমরা তো ভুলেই গেছি কী করে ঠিকঠাক গোসল করতে হয়, কীভাবে মেনে চলতে হয় স্বাস্থ্যবিধি।
নিজেদের শরীর ও বাড়ির চারপাশে আমরা যত নোংরা জমিয়েছি- প্রকৃতি জননী এবার আমাদের শিক্ষা দেবে, কীভাবে নিজেদের পরিষ্কার রাখতে হয়।...
দুর্ভাগ্যক্রমে অনেক নিষ্পাপ মানুষও মারা যাচ্ছেন, এবং আরও মারা যাবেন।...
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের ত্রাণকর্তা হয়ে উঠবে, যদি এমনটা ভেবে থাকেন, সামাজিক দূরত্ব কোনো কাজেই আসবে না আপনার। ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ও ভুল সংযোগের ছড়াছড়ি আপনার ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙ্গে দিতে পারে।... এ সময়ে আপনার একটু দম নেওয়া দরকার।
কেননা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আপনাকে ততক্ষণ পর্যন্ত নাকাল করতেই থাকবে, যতক্ষণ না আপনার মানসিক অবস্থা এমন সুস্থিতিতে পৌঁছায় যে, আপনি উপলব্ধি করতে পারেন- কোভিড-১৯ নয়, বরং 'ভাইরাল' হওয়ার লোভে ছড়ানো আতঙ্ক ও ভয়ই আমাকে মেরে ফেলছে। এইসব আতঙ্ক থেকে আপনি শুধু অন্যের নয়, বরং নিজেরও মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠছেন। এর ফলে শেষ হাসিটি আপনি নন, বরং কোভিড-১৯-ই হাসবে।...
তাই এখন সময় হয়েছে চূড়ান্ত রকমের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার, নিজেকে সম্পূর্ণ 'আইসোলেশন' বা জনবিচ্ছিন্নতায় রাখার।...
সবাই নিরাপদ থাকুন।
আপনার এবং আমার সচেতনতাই পারে বাঁচাতে: টিপু
বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ নিয়ে আমরা সবাই খুবই শঙ্কিত এবং চিন্তিত। আমরা যদি সচেতন না হই তাহলে বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন কমিউনিটিতে এই ভাইরাসটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ কারণে আপনাদের কাছে আমার বিশেষ, বিশেষ, বিশেষভাবে বিনীত অনুরোধ, এ সময়ে আমরা সবাই বাসায় থাকব এবং পরিবারের প্রিয়জনদের সময় দেব এবং সুরক্ষিত থাকব।
আপনার এবং আমার সচেতনতাই পারে, বাংলাদেশকে এবং পৃথিবীকে এ মহামারি থেকে বাঁচাতে।
সো, প্লিজ, প্লিজ, প্লিজ, স্টে হোম, স্টে সেফ।