মেধাস্বত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগ: গ্রামীণফোনকে আইনী নোটিশ দিল হুমায়ুন আহমেদের পরিবার
মেধাস্বত্ব লঙ্ঘনের দায়ে গ্রামীণফোনকে আইনী নোটিশ দিয়েছেন হুমায়ুন আহমেদের পরিবারের সদস্যগণ।
কিংবদন্তি লেখক প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদের সৃষ্ট জনপ্রিয় চারটি নাটকের চরিত্র বাকের ভাই, এলাচি বেগম, সোবহান সাহেব এবং তৈয়ব আলী- কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করে লেখকের মেধাস্বত্ব লঙ্ঘন করার কারণে মোবাইল ফোন কোম্পানী গ্রামীণফোনকে আইনী নোটিশ পাঠিয়েছেন লেখকের পরিবারের সদস্য ও উত্তরাধিকারগণ।
প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, কন্যা নোভা আহমেদ, শীলা আহমেদ, বিপাশা আহমেদ, পুত্র নূহাশ হুমায়ুন এবং ভাই জনাব জাফর ইকবাল এর পক্ষে আইনী নোটিশটি গ্রামীণফোনকে পাঠান আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মিজবাহ। উল্লেখ্য যে মোবাইল ফোন কোম্পানী গ্রামীণফোন ২০২০ এর জুলাই মাসে "কেমন আছেন তারা" শীর্ষক কয়েক পর্বের একটি ধারাবাহিক প্রোমোশনাল অনুষ্ঠান প্রচার করেন। অনুষ্ঠানটির টাইটেল ছিল "গ্রামীণফোন নিবেদিত "কেমন আছেন তারা?", যা গ্রামীণফোন এর ফেইসবুক পেজ এবং ইউটউব চ্যানেল থেকে রিলিজ হয় এবং প্রচারিত হতে থাকে। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রয়াত লেখক হুমায়ুন আহমেদের রচিত চারটি জনপ্রিয় চরিত্র বাকের ভাই (কোথাও কেউ নেই), এলাচি বেগম (অয়োময়), সোবহান সাহেব (বহুব্রীহি) এবং তৈয়ব আলী (উড়ে যায় বক পক্ষী) কে ব্যবহার করা হয় যার জন্য গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে হুমায়ুন আহমেদের পরিবারের সদস্য বা উত্তরাধিকারীদের নিকট থেকে কোনো প্রকার অনুমতি বা লাইসেন্স নেয়া হয়নি। উক্ত চারটি চরিত্র ব্যবহার করা পর্বগুলো ৩০ লক্ষবারের বেশি 'ভিউ' হয়েছে। প্রচলিত আইনে এই ধরনের ব্যবহারের জন্য বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও গ্রামীণফোন তা মানেনি যার ফলে মেধাস্বত্ব আইন লঙ্ঘিত হয়েছে।
এই ব্যাপারে প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন বলেন, "হুমায়ুন আহমেদ এর সৃষ্ট অনেকগুলো চরিত্রের মধ্যে বাকের ভাই, এলাচি বেগম, সোবহান সাহেব এবং তৈয়ব আলী চরিত্রলো অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সর্বজনবিদিত যা এখনো দর্শকদের হৃদয়ে লেগে আছে। এ সমস্ত চরিত্রের অনুমতিবিহীন এবং বাণিজ্যিক ব্যবহার হুমায়ুন আহমেদের মেধাস্বত্ব অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং কোনোভাবেই কাম্য নয়। হুমায়ুন আহমেদের মেধাস্বত্ব সুরক্ষায় ওনার পরিবারের সদস্যগণ সদা সচেষ্ট এবং প্রচলিত আইনের উপর আস্থা রেখে যা যা করা প্রয়োজন তার সবটুকুই করবে"।
আইনী নোটিশে গ্রামীণফোনকে উক্ত মেধাস্বত্ব লঙ্ঘিত পর্বগুলো ৩ দিনের মধ্যে অপসারণপূর্বক হুমায়ুন আহমেদ এর পরিবারের সদসদেরকে জানানোর জন্য বলা হয়েছে এবং হুমায়ুন আহমেদ এর মেধাস্বত্ব লঙ্ঘনের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ ১৫ দিনের মধ্যে তার পরিবারের সদসদেরকে প্রদান করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আদালতের মাধ্যমে ব্যাপারটির সমাধান হবে বলে জানান প্রয়াত লেখকের উত্তরাধিকারগণ।