১৯ বছর পর ব্রিটনির কাছে ক্ষমা চাইলেন প্রাক্তন প্রেমিক টিম্বারলেক
ইনস্টাগ্রামে প্রাক্তন প্রেমিকা ব্রিটনি স্পিয়ার্সের কাছে ক্ষমা চাইলেন জাস্টিন টিম্বারলেক। ১৯ বছর আগে প্রকাশ্যে নিজেদের সম্পর্কের বিচ্ছেদের জন্য তিনি ব্রিটনিকে দায়ী করেছিলেন। পরবর্তীকালে এ ঘটনাকে পুঁজি করে গানের প্রচারের জন্যও ব্যবহার করেছিলেন তিনি।
একই পোস্টে টিম্বারলেক ক্ষমা চেয়েছেন জ্যানেট জ্যাকসনের কাছেও। ২০০৪ সালে তিনি সুপার বোলের মঞ্চে উপস্থিত সবার সামনে জ্যানেটের পোশাক ছিঁড়ে ফেলেছিলেন।
ইন্সটাগ্রামের দীর্ঘ সে পোস্টে টিম্বারলেক লিখেন, 'আমি বিশেষভাবে ব্রিটনি স্পিয়ার্স ও জ্যানেট জ্যাকসনের কাছে ক্ষমা চাই। এরা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমি এদের সম্মান করি এবং জানি, এদের কাছে ব্যর্থ হয়েছি।'
ব্রিটনি তার জীবনে পুরুষদের মাধ্যমে কীভাবে নিগৃহীত হয়েছেন, সম্প্রতি প্রকাশিত 'ফ্রেমিং ব্রিটনি স্পিয়ার্স' তথ্যচিত্রে তা দেখানো হয়েছে।
ব্রিটনির অনুসারীদের দাবি, সেই পুরুষদের মধ্যে টিম্বারলেক অন্যতম। এই তারকা জুটি ১৯৯৯-২০০২ সাল পর্যন্ত ভালোবাসার সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন। হঠাৎ তাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটে আর এর দায় বর্তায় ব্রিটনির ওপর। অভিযোগ ওঠে, ব্রিটনি প্রতারণা করেছিলেন জাস্টিনের সঙ্গে।
তবে এতে যেন জাস্টিন টিম্বারলেকের ক্যারিয়ারের পারদে উর্ধ্বগতি দেখা যায়। ব্রিটনি তার হৃদয় ভেঙেছেন- এই অপবাদ পুঁজি করে নিজের গানের অ্যালবামগুলোর দেদার প্রচার করতে থাকেন টিম্বারলেক।
এছাড়াও ব্রিটনি আর তার বাবা জেমি স্পিয়ার্সের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চলছে। ব্রিটনি তার বাবার অভিভাবকত্ব চান না। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তার ভক্তরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। তেমনই এক পোস্টে টিম্বারলেককে ট্যাগ করার পর তিনি এ ক্ষমার আবেদন জানালেন।
ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে এই ক্ষমাপ্রার্থনার পর্ব নিয়ে এখনো দুই তারকার কেউ কোনো মন্তব্য করেননি।
২০০২ সালে এক সাক্ষাৎকারে ব্রিটনিকে উপস্থাপক ডায়না সয়্যার বলেছিলেন, 'তিনি (টিম্বারলেক) টেলিভিশনে বলে বেড়াচ্ছেন, আপনি তার হৃদয় ভেঙেছেন। আপনি তাকে কষ্ট দিয়েছেন। আপনি কী আসলেই এমনটা করেছেন?'
জবাবে ব্রিটনি বলেছিলেন, 'আমাদের দুজনেরই বয়স কম। এটা আসলে একদিন হওয়ারই ছিল। আমি তাকে সবসময় ভালোবেসে যাব।'
'প্রত্যেকেরই আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, নিজের গল্পে আলাদা একটা ভূমিকা রয়েছে। আমি তাকে ভুল বলছি না, তবে সে যে সঠিক- তা-ও মানছি না।'
বিচ্ছেদের পর জাস্টিনের 'ক্রাই মি আ রিভার' গানটি ব্রিটনিকে নিয়ে লেখা বলে ভাবা হয়।
গানের কথা অনেকটা এমন, 'তোমাকে মুখে বলতে হবে না, তুমি যা করেছ। আমি ইতোমধ্যে সবটা জানি, তার মুখ থেকে।... এখন তোমার সময়, এখন তুমি কাঁদবে।'
অন্যদিকে, বিচ্ছেদের পর ব্রিটনির 'এভরিটাইম' গানটির কথা ছিল, 'যতবার ওড়ার চেষ্টা করি, ডানাবিহীন এই আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি... আমার দুর্বলতা তোমায় আঘাত করেছে এবং আমার এ গান তোমার প্রতি আমার দুঃখপ্রকাশ।'
শুক্রবারের পোস্টে টিম্বারলেক জানান, ব্রিটনিকে নিয়ে করা ওই তথ্যচিত্রে তাকে যেভাবে দায়ী করা হচ্ছে, তা সম্পর্কে তিনি অবগত।
'সমস্ত বার্তা, ট্যাগ, কমেন্ট এবং মানুষের উদ্বেগ সবই আমার চোখে পড়েছে এবং আমি এর জবার দিতে চাই। আমি আমার জীবনের সে সময়টির জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি- যখন আমার জন্য তাকে যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। আমি তখন রাগের মাথায় অনেক কিছু বলেছি এবং যা আসলেই বলা উচিত ছিল- তা বলা থেকে বিরত থেকেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার দুর্ভাগ্য, আমার কথাবার্তা ও আচার-আচরণ সে সময় এমন একটি সিস্টেমকে উপকৃত করেছে, যেটি নারীবিদ্বেষ ও বর্ণবাদের সমর্থক।'
'আমার এ ক্ষমা অতীতের কৃতকর্ম বদলে দেবে না... জীবনে আমি যাদের ভালোবাসি এবং ভালোবেসেছি, তাদের জন্য সবসময় সবচেয়ে ভালোটাই কামনা করে যাব।'
এছাড়া জ্যানেট জ্যাকসনের কাছেও ক্ষমা চেয়েছেন টিম্বারলেক। ২০০৪ সালে আমেরিকার মর্যাদাপূর্ণ সুপার বোল গেমের অনুষ্ঠান মঞ্চে পারফর্ম করা শেষে তিনি জ্যানেটের পোশাক ছিঁড়ে ফেলেন। তার ওই আচরণে শুধু জ্যানেটই নন, উপস্থিত দর্শকেরাও বিরক্ত হয়েছিলেন।
তারা দুজনে একে 'ওয়ার্ডরোব ম্যালফাংকশন' হিসেবে কাটিয়ে দিতে চাইলেও আয়োজক কর্তৃপক্ষ এমটিভি এবং ভায়াকম ভীষণ বিব্রত হয়। ভায়াকম জ্যানেট জ্যাকসনকে কালো তালিকাভুক্ত করে এবং গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে তার যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
- সূত্র: ডেইলি মেইল