‘বেসিক ইন্সটিংক্ট’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সন্তানের অভিভাবকত্ব হারাই: শ্যারন স্টোন
নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় সিনেমা 'বেসিক ইন্সটিংক্ট'-এ অভিনয়ের জন্য ২০০৪ সালে সন্তানের অভিভাবকত্ব হারিয়েছিলেন হলিউডের নামকরা অভিনেত্রী শ্যারন স্টোন। সম্প্রতি এক পডকাস্টে নিজেই এ কথা জানালেন অভিনেত্রী। খবর বিবিসির।
নব্বই দশকের ইরোটিক সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম শ্যারন স্টোন অভিনীত 'বেসিক ইন্সটিংক্ট'। এ সিনেমার অবাধ যৌনতা রীতিমতো অবাক করেছিল পশ্চিমা দর্শকদেরও। সিনেমায় যৌন দৃশ্যে অভিনয়ের জন্যই নাকি সন্তানের অভিভাবকত্ব হারিয়েছিলেন তিনি।
২০০০ সালে স্টোন ও তার স্বামী রন ব্রনস্টেইন রোয়ান নামের এক শিশু দত্তক নিয়েছিলেন। কিন্তু ২০০৪ সালে যখন এ দম্পতির বিচ্ছেদ হয়, তখন বিচারক এই সন্তানের অভিভাবকত্ব মা স্টোনকে না দিয়ে বরং বাবা রনকে দেন।
সন্তানের অভিভাবকত্ব হারানোর প্রসঙ্গে পডকাস্টে স্টোন জানান, ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 'বেসিক ইন্সটিংক্ট' সিনেমায় বিতর্কিত অভিনয়ের জন্য তার সম্পর্কে অনেকের মনেই একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছিল। সে তালিকা থেকে বাদ যাননি ওই মামলার বিচারকও।
সন্তানের অভিভাবকত্বের ইস্যুতে 'বেসিক ইন্সটিংক্ট' সিনেমার প্রভাব সম্পর্কে স্টোন বলেন, "বিচারক আমার চার বছরের ছেলেকে জিজ্ঞাসা করেছিল, 'তুমি কি জানো, তোমার মা যৌনতার ওপর ভিত্তি করে বানানো সিনেমায় অভিনয় করেন?'"
শুধু সিনেমার একটি চরিত্রের জন্য সন্তানের অভিভাবকত্ব হারিয়ে কষ্ট পেয়েছিলেন স্টোন। পোডকাস্টে উপস্থাপক ব্রুস বজ্জিকে এ অভিনেত্রী বলেন, "আদালতের রায়ে সন্তানের অভিভাবকত্ব হারিয়ে আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মায়ো ক্লিনিকে ভর্তি হতে হয়েছিল। সন্তানহারা হয়ে আমি সত্যিই খুব কষ্ট পেয়েছিলাম।"
বর্তমানে টেলিভিশনগুলোতে অহরহ যে যৌন দৃশ্য প্রদর্শিত হয়, সেটি উল্লেখ করে স্টোন বলেন, "বেসিক ইন্সটিংক্ট সিনেমায় দর্শক হয়তো আমার ১৬ সেকেন্ডের ওই দৃশ্য দেখেছিল। আর এ কারণে আমি আমার সন্তানের অভিভাবকত্ব হারিয়েছি!"
তবে শুধু বিচারক কিংবা দর্শকই নয়, বরং হলিউডের একটি বিশাল অংশও 'বেসিক ইন্সটিংক্ট' এ স্টোনের ওই দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য তাকে ভিন্নচোখে দেখতে শুরু করেন। সিনেমাটি নিয়ে হলিউডের তৎকালীন দৃষ্টিভঙ্গী বোঝাতে স্টোন বলেন, "আমি সিনেমাটিতে অভিনয়ের পর গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছিলাম। কিন্তু অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটিতে যাওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ আমাকে দেখে হাসতে শুরু করে।"
বর্তমানে অভিনেত্রী স্টোন ইরোটিক সিনেমাগুলোতে কাজ করা এড়িয়ে চলেন। স্টোন বলেন, "অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে আমি খুব অপমানিত বোধ করেছিলাম। আমি শুধু ভাবছিলাম, কেউ কি জানে যে, আমি ওই দৃশ্যে অভিনয় করার জন্য কতটা কষ্ট করেছি! সিনেমার চরিত্রের সাথে অভিনেত্রীদের বাস্তব জীবন মেলানো উচিত নয়।"
থ্রিলারধর্মী 'বেসিক ইন্সটিংক্ট' সিনেমায় এক লেখিকার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন স্টোন। যার বিরুদ্ধে এক সঙ্গীত শিল্পীকে খুনের অভিযোগ উঠে আসে। সেই খুনের রহস্য সমাধানের দায়িত্বে ছিলেন অভিনেতা মাইকেল ডয়লাস। ২০০২ সালে সিনেমাটির সিক্যুয়েল মুক্তি পায়। দুটি সিনেমাই সিনেপ্রেমীদের কাছে সমানভাবে জনপ্রিয়।