হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি: কী ছিল হাইকোর্টের রায়ে
প্রথমত কথা হচ্ছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বেগুনবাড়ি ও গুলশান এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া যে জলধারাকে আমরা 'হাতিরঝিল লেক' বলে চিনি, সেটি আসলে 'নড়াই' নদী। এই নদীটি রামপুরার পাশ দিয়ে পুবদিকে বালু নদীতে গিয়ে মিশেছে। কিন্তু সেই 'নড়াই' নদী এখন রামপুরার পাশ দিয়ে বয়ে চলা একটি ক্ষীণরেখা বা একটি ড্রেন এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডেও এর নাম 'রামপুরা খাল'। দখল দূষণে বিপর্যস্ত এই নদীর আরেকটি অংশ উদ্ধার করে নাম দেয়া হয়েছে 'হাতিরঝিল লেক'। কোথাও 'নড়াই' নামের অস্তিত্ব নেই। একটি নদী কী করে তার পরিচয় হারিয়ে ফেলে খাল/ড্রেন ও লেকে পরিণত হয়, তার নির্মম উদাহরণ এই 'নড়াই নদী'।
তবে রাজধানীর অন্যতম দর্শনীয় স্থানে পরিণত হওয়া হাতিরঝিলের পরিবেশ সুরক্ষায় উচ্চ আদালতের একটি রায় নিয়ে জনমনে কিছুটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। বলা হচ্ছে, হাইকোর্ট ওই রায়ে হাতিরঝিলের জনপ্রিয় গণপরিবহন ওয়াটার ট্যাক্সি চলাচল বন্ধের আদেশ দিয়েছেন। আসলে কি তা-ই?
সেই প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে দেখা যাক মামলাটা কী?
হাতিরঝিলের পরিবেশ সুরক্ষার দাবিতে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের একটি রিট পিটিশনের (নং ১১৪৫৫) পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এই রিট মামলার শুনানি হয় ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি এবং বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ মামলার রায় দেন গত বছরের ৩০ জুন। পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয় গত মঙ্গলবার (২৪ মে)।
রায়ে আদালত হাতিরঝিলের পানি এবং এর নজরকাড়া সৌন্দর্যকে 'অমূল্য সম্পদ' উল্লেখ করে বলেন, এই অমূল্য সম্পদ কোনোভাবে ধ্বংস বা ক্ষতি করা যাবে না। ৫৫ পৃষ্ঠার এই পূর্ণাঙ্গ রায়ের ৫৪ পৃষ্ঠায় যে ৪টি আদেশ দেয়া হয়েছে, সেখানে হাতিরঝিলকে 'ঢাকার ফুসফুস' উল্লেখ করে এটিকে জনগণের সম্পত্তি বলে ঘোষণা করা হয়। সেইসঙ্গে হাতিরঝিল এলাকায় হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ উল্লেখ করে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে এগুলো উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদেশের সঙ্গে হাইকোর্ট ৯টি পরামর্শ দিয়েছেন, যার ৬ নম্বরে বলা হয়েছে, 'পানির জন্য ক্ষতিকর হেতু লেকে সকল প্রকার যান্ত্রিক যান তথা ওয়াটার ট্যাক্সি সার্ভিস ব্যবহার নিষিদ্ধ করা'।
মনে রাখা দরকার, এটি হাইকোর্টের পরামর্শ, আদেশ নয়। আদেশ মানা বাধ্যতামূলক; পরামর্শ মানা সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। উল্লেখ করা যেতে পারে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়েও উচ্চ আদালত এই মর্মে পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন যে, সংসদ চাইলে একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে। কিন্তু ২০১০ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর জন্য গঠিত বিশেষ কমিটি আদালতের এই পর্যবেক্ষণ আমলে নেয়নি। তাদের যুক্তি ছিল, আদালতের পর্যবেক্ষণ রায়ের অংশ নয়। সুতরাং এটা মানা বাধ্যতামূলক নয় (আমীন আল রশীদ, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী: আলোচনা-তর্ক-বিতর্ক, পৃষ্ঠা ১৭২)।
হাতিরঝিলের পরিবেশ সুরক্ষাসম্পর্কিত এই রায়ে আদালত মনে করেছেন যে, হাতিরঝিলের পানি সুরক্ষিত রাখার জন্য এখানে ওয়াটার ট্যাক্সি না চালানো ভালো। এখন সরকার যদি এটা বিবেচনা করে এখানে ওয়াটার ট্যাক্সি বন্ধ করে দেয়, সেটা তাদের এখতিয়ার। কিন্তু তার আগে অনেকগুলো বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে। কারণ ওয়াটার ট্যাক্সির কারণে হাতিরঝিলের পানি আসলেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কি না এবং এই লেকে ওয়াটার ট্যাক্সি চলাচলের কারণে নাগরিকদের যাতায়াতে কী সুবিধা হচ্ছে, এটি রাজধানী ঢাকার সড়কে ভয়াবহ জ্যাম নিরসনে কতটা ভূমিকা রাখছে এবং সর্বোপরি আরামদায়ক ও পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন হিসেবে কতটা ভূমিকা রাখছে—সে বিষয়ে পরিবেশবিদ, নগরবিদ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলা দরকার। দ্বিতীয়ত, কোন বাস্তবতায় হাতিরঝিলে ওয়াটার ট্যাক্সি চালু করা হয়েছিল এবং এর ফলে রাজধানীর গণপরিবহনে কী উন্নতি হয়েছে, এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী হবে, পুরো ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থায় এরকম ওয়াটার ট্যাক্সির গুরুত্ব কতটা—সেটিও আমলে নিতে হবে।
হাইকোর্ট এই রায়ে যে ৯টি পরামর্শ দিয়েছেন সেখানে হাতিরঝিল লেক সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর অধীনে একটি কর্তৃপক্ষ গঠন; জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য মাটির নিচে আন্তর্জাতিক মানের টয়লেট স্থাপন; পায়ে চলার রাস্তা, বাইসাইকেল লেন এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আলাদা লেন তৈরি; লেকে মাছের অভয়ারণ্য করা এবং হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পটি বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে নামকরণের কথাও বলা হয়েছে।
এই পরামর্শগুলো নিঃসন্দেহে ভালো এবং এগুলো বাস্তবায়ন করা খুব কঠিন নয়। কিন্তু ওয়াটার ট্যাক্সি বন্ধ করা হলে নগরীর গণপরিবহনে এর কী কী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং ওয়াটার ট্যাক্সি চললে আসলেই পানির ক্ষতি হয় কি না—সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার দাবি রাখে। কেননা নৌযান চলাচলের কারণে যদি পানির ক্ষতি হয়, তাহলে দেশের কোনো নদীতেই নৌযান চলাচল করতে পারবে না। তাছাড়া হাতিরঝিলে যে ওয়াটার ট্যাক্সি চলে, সেগুলোর শব্দ খুবই কম এবং খুব দ্রুতগতির নয় যে এখানে শব্দ দূষণ হবে কিংবা মাছের প্রজনন ব্যাহত হবে। তার চেয়ে বড় কথা, এখানে মাছের অভয়ারণ্য করে যে অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাবে, তার চেয়ে প্রতিদিন এই জলপথ ব্যবহার করে শত শত মানুষ যে তাদের গন্তব্যে যেতে পারছেন, সেটিও কি কম গুরুত্বপূর্ণ? নদীমাতৃক বাংলাদেশের শত শত নদী যেখানে প্রভাবশালীরা দখল করে ফেলেছে; শিল্পকারখানার বর্জ্যে যেখানে নদীগুলোয় মাছ তো দূরে থাক, পোকামাকড়ও বাঁচতে পারে না, সেখানে শুধু এই হাতিরঝিলে মাছের অভয়ারণ্য করে কতটুকু সুবিধা পাওয়া যাবে? বরং নদীতে 'লিভিং এনটিটি' বা 'জীবন্ত সত্ত্বা' ঘোষণা করে ২০১৯ সালে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন, সেই রায়ের আলোকে দেশের সবগুলো নদী দখল ও দূষণমুক্ত করতে সরকারের একটি ক্র্যাশ প্রোগ্রাম হাতে নেয়া দরকার।
বাস্তবতা হলো, ছোট-বড় নদী ও খাল, অর্থাৎ যেখানেই জলের প্রবাহ আছে, সেটিকে সব সময় জনগণের নজরে রাখার একটি বড় উপায় হচ্ছে সেখানে নৌ যোগাযোগ স্থাপন করা। উন্নত বিশ্বেও যেসব শহরের ভেতরে এরকম নদী-খাল ও লেক আছে, সেখানের সরকার ও কর্তৃপক্ষ ওই জলপথকে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে। সেখানে নানারকম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গড়ে তোলে। পর্যটনকেন্দ্র কেন্দ্র গড়ে তোলে। ইতালির শহর ভেনিস যার বড় উদাহরণ। আমরা কথায় কথায় যে শহরের কথা বলি।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ঢাকার বুক থেকে দখল হয়ে যাওয়া খালগুলো পুনরুদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছেন। এরইমধ্যে কয়েকটি উদ্ধার করেছেন। এমনকি কোনো কোনোটায় তিনি নৌকাও চালিয়েছেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, সবগুলো খাল উদ্ধার করে সেখানে নৌযান বা ওয়াটার ট্যাক্সি চালু করা হবে এবং এই খালগুলোর সঙ্গে ঢাকার চারপাশে ঘিরে থাকা বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও বালু নদীর সংযোগ স্থাপন করা হবে। এভাবে ঢাকার অন্যতম প্রধান গণপরিবহন ব্যবস্থাটি হবে নৌপথকেন্দ্রিক। শুধু উত্তরের মেয়র নন, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসও দখল হয়ে যাওয়া খালগুলো পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
হোটেল সোনারগাঁও পর্যন্ত এখন হাতিরঝিলের প্রবাহ আছে। এটিকে আরেকটু পশ্চিমে কাঁঠালবাগানের ভেতর দিয়ে, অর্থাৎ পান্থপথের পাশ দিয়ে রাসেল স্কয়ারে গিয়ে ধানমন্ডি লেকের সঙ্গে যুক্ত করা গেলে হাতিরঝিল ও ধানমণ্ডি লেকের মধ্যে একটা দারুণ সংযোগ স্থাপিত হবে। তখন ধানমন্ডির লোকেরা অনায়াসে এই ওয়াটার ট্যাক্সিতে চড়ে ১৫ মিনিটে গুলশানে চলে আসতে পারবেন। এখন সড়কপথে জ্যাম থাকলে ধানমন্ডি থেকে গুলশান যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা বা তারও বেশি। আবার এই জলধারা যদি পশ্চিম দিক দিয়ে বুড়িগঙ্গায় গিয়ে মেশে তাহলে সদরঘাটে লঞ্চে নেমে সেখান থেকে যাত্রীরা আবার নৌপথেই মূল শহরের ভেতরে চলে আসতে পারবেন। এতে তাদের সময় ও অর্থ বাঁচবে। রাস্তার জ্যামে বসে থেকে থেকে তাদের যে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হয়, সেটিও কমবে। সুতরাং অনেক কিছু বিবেচনায়ই হাতিরঝিলে নৌযান চলাচল বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
হাতিরঝিলকে কেন্দ্র করে অস্থায়ী বা ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট করাও অযৌক্তিক নয়। কারণ রাজধানীর আরেকটি দৃষ্টিনন্দন জায়গা ধানমন্ডি লেকের পাড়েও রেস্টুরেন্ট আছে। মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে গিয়ে যদি ফুচকা-চটপটি-ঝালমুড়ি বা চা-কফির মতো হালকা খাবার খেতে চায়, সেই ব্যবস্থা তো থাকা দরকার। মনে রাখতে হবে, এরকম দৃষ্টিনন্দন জায়গা ঘিরে যেসব ছোটোখাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে, অর্থনীতির ভাষায় সেগুলোকে বলা হয় 'ইনফরমাল ইকোনমি'—সামগ্রিক অর্থনীতিতে যার দারুণ ভূমিকা আছে।
করণীয় কী?
১. ওয়াটার ট্যাক্সি চললেও যাতে হাতিরঝিলের পানি দূষিত না হয়, সে বিষয়ে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
২. স্থায়ী রেস্টুরেন্ট না থাকলেও অন্তত অস্থায়ী বা ভ্রাম্যমাণ রেস্টুরেন্ট থাকা উচিত। তবে সেখান থেকে কোনো খাবারের উচ্ছিষ্ট, পানির বোতল, প্লাস্টিকের প্যাকেট যাতে ফেলা না হয়, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি ও জরিমানার ব্যবস্থা করতে হবে। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কে এই জরিমানার আওতায় আনতে হবে।
৩. হাতিরঝিল লেকে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
৪. এখানে পরিবার ও প্রিয়জন নিয়ে ঘুরতে গিয়ে কেউ যাতে নাজেহাল বা হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়াতে হবে।
৫. বেপরোয়া বাইকার ও বখাটেদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
৬. হাতিরঝিলকে একটি সুস্থ বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত করতে হবে।
৭. হাইকোর্ট এই রায়তে যেভাবে হাতিরঝিলকে ঢাকার ফুসফুস বলেছেন, এটিকে সত্যিই মানুষের প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেয়ার একটি জায়গায় পরিণত করতে হবে।
পরিশেষে, মহামান্য হাইকোর্ট যেহেতু রায় দিয়েছেন এবং রায়ে তারা বিস্তারিতভাবে হাতিরঝিলের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন, সুতরাং হাতিরঝিলের পানি ও পরিবেশ সুরক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে। ছোট্ট আয়তনে বিপুল জনসংখ্যার দেশে অর্থনীতি, গণপরিবহন ও বিনোদনের বিষয়গুলো যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি সেই অর্থনীতি, উন্নয়ন ও বিনোদনের দোহাই দিয়ে প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করার কোনো সুযোগ নেই। অর্থাৎ প্রাণ-প্রকৃতি, পানি ও পরিবেশ সুরক্ষিত রেখেই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে। সেজন্য দক্ষ জনবল তৈরি এবং পদ্ধতি গড়ে তুলতে হবে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও নিয়ম অমান্যকারীর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে মোটা অংকের জরিমানার ব্যবস্থা করতে হবে। এসব নিশ্চিত করা গেলে হাতিরঝিলের প্রাণ-প্রকৃতি যেমন সুরক্ষিত থাকবে, তেমনি একে কেন্দ্র করে নানাবিধ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও পরিচালনা করা যাবে।
- আমীন আল রশীদ, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর, নেক্সাস টেলিভিশন