আমেরিকা থেকে তেল আমদানি ৫০% কমিয়ে রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল আনছে ভারত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অপরিশোধিত তেলের আমদানি প্রায় এক মিলিয়ন মেট্রিক টন কমিয়েছে ভারত। এর বিপরীতে দেশটি চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে রাশিয়া থেকে সস্তায় ব্যাপক হারে তেল আমদানি বাড়িয়েছে। নতুন এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
গেল এক বছরে ভারতের জ্বালানি শক্তি আমদানির চিত্রে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে। গতবছর ভারত তার মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির ৯.২ শতাংশ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে এবং রাশিয়া থেকে করেছিল মাত্র ২.২ শতাংশ। অথচ কেবল এক বছরের ব্যবধানে সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে এ চিত্র। বর্তমানে রাশিয়া থেকে ভারতের অপরিশোধিত তেল আমদানির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়ে ১২.৯ শতাংশে এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে কমে গিয়ে ঠেকেছে মাত্র ৫.৪ শতাংশে।
ভারত নিজের চাহিদার ৮০ শতাংশ জ্বালানি তেল বিদেশ থেকে আমদানি করলেও রাশিয়ার তেলের বড় ক্রেতা ছিলনা কখনোই। সাধারণত চাহিদার ২ থেকে ৩ শতাংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করে দেশটি। তবে ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার পণ্যের ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় তেল আমদানির ক্ষেত্রে এখন বেশ লাভজনক অবস্থানে রয়েছে ভারত।
২০২১ সালে ভারত মাত্র ১২ মিলিয়ন ব্যারেল অশোধিত তেল রাশিয়া থেকে আমদানি করেছিল। সেবছর চাহিদার বেশিরভাগই পূরণ হয়েছিল ইরাক, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং নাইজেরিয়া থেকে।
কিন্তু চলতি বছরের মে থেকেই রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়াতে থাকে ভারত।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার প্রথম ৩ মাসে রাশিয়া থেকে ৫.১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের তেল, গ্যাস এবং কয়লা আমদানি করেছে দেশটি, যা এক বছর আগের আমদানির হিসাবের তুলনায় পাঁচ গুণেরও বেশি।
শুধু ভারত নয়, চীনও ব্যাপক হারে বাড়িয়েছে রাশিয়া থেকে তেল আমদানির পরিমাণ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মে'র শেষ পর্যন্ত, প্রথম তিন মাসে ১৮.৯ বিলিয়ন ডলারের অপরিশোধিত তেল রাশিয়া থেকে আমদানি করেছে চীন, যা এক বছর আগের পরিমাণের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
মূলত সস্তায় তেল কেনার সুযোগ পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকেছে ভারত।
ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)-এর মতে, রাশিয়ার ইউরাল ক্রুড অয়েল রেকর্ড ডিসকাউন্টে (ছাড়ে) বিক্রি হচ্ছে।
ট্রান্সভার্সাল কনসালটিং-এর প্রেসিডেন্ট এলেন ওয়াল্ড সিএনবিসিকে বলেন, বেশ কয়েকটি ট্রেডিং ফার্ম, যেমন- গ্লেনকোর এবং ভিটল ব্যারেল প্রতি ইউরাল মিশ্রিত তেলে যথাক্রমে ৩০ ও ২৫ মার্কিন ডলার করে ছাড় দিচ্ছে।
মূলত এ কারণেই রাশিয়ার তেলের দিকে ঝুঁকছে তেল আমদানিকারক বড় দেশগুলো।
- সূত্র: অয়েল প্রাইস ডট কম