খুব দ্রুতই দুটো পারমাণবিক শক্তিকে একসঙ্গে সামলাতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে, হোয়াইট হাউসের আশঙ্কা
আগামী এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দুইটি বড় পারমাণবিক পরাশক্তির মোকাবিলা করতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। খবর দ্য গার্ডিয়ান-এর।
এ দুইটি শক্তি হলো রাশিয়া ও চীন। ইউক্রেন যুদ্ধে বারবার পারমাণবিক অস্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে আনছে রাশিয়া। অন্যদিকে চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলপত্রে (এনএসএস) চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন প্রতিযোগী হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর রাশিয়া দ্রুততার সঙ্গে উঠে আসা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী প্রতিযোগী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। রাশিয়ান সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে বর্তমানে বিশেষ সুবিধা করতে পারছে না বলে পুতিনের পারমাণবিক হুমকি আরও বাড়তে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে ওই কৌশলপত্রে।
এনএসএস গত স্প্রিং-এ প্রকাশিত হওয়ার কথা থাকলেও রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর তা স্থগিত করা হয়।
'যে কোনো উপায়' ব্যবহার করে রাশিয়ান অঞ্চলকে রক্ষা করবেন বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে ২০১৪ সালে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা ক্রিমিয়া ও বর্তমান যুদ্ধ শুরুর পর দখল করা চারটি ইউক্রেনীয় এলাকা। এনএসএস-এ জানানো হয়েছে রাশিয়ার এ ধরনের হুমকিতে ইউক্রেনের ওপর মার্কিন সমর্থনে কোনো প্রভাব পড়বে না।
'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া বা অন্য কোনো শক্তিকে নিউক্লিয়ার শক্তি ব্যবহার করে বা ব্যবহারের হুমকি দিয়ে কোনো স্বার্থ কায়েম করতে দেবে না,' ওই কৌশলপত্রে জানানো হয়।
ওই কৌশলপত্রের মুখবন্ধে বাইডেন মস্কো ও বেইজিংয়ের নিউক্লিয়ার হুমকির মধ্যে একটি পার্থক্য টেনেছেন। 'রাশিয়া স্বাধীন ও মুক্ত বিশ্বব্যবস্থায় একটি আশু হুমকি। এটি মৌলিক আন্তর্জাতিক আইনগুলো অবিবেচকের মতো অবজ্ঞা করছে,' মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিখেন।
অন্যদিকে চীনকে 'আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে নতুন করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা ও সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, সামরিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষমতাসম্পন্ন একমাত্র দেশ' হিসেবে বর্ণনা করেছেন বাইডেন।
কৌশলপত্রটিতে বেইজিংকে 'আমেরিকার সবচেয়ে গুরুতর ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ' হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
ফেডারেশন অভ আমেরিকান সায়েন্টিস্টস-এর অনুমান অনুযায়ী, চীনের কাছে আনুমানিক ৩৫০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ৫,৯৭৭টি। আর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংগ্রহে থাকা মোট পারমাণবিক অস্ত্র ৫,৪২৮টি।
পেন্টাগন মনে করে, ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০০-এর বেশি পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক হবে চীন। এর মাধ্যমে বিশ্বের তৃতীয় পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হবে এটি।
বর্তমানে বলবৎ থাকা অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি নিউ স্টার্ট অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ১,৫৫০টির বেশি কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনযোগ্য অবস্থায় রাখতে পারে না।