চাকরি হারালেও টুইটার থেকে ৪২ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন পরাগ আগারওয়াল!
আর কিছুদিন পরেই টুইটারের সিইও হিসাবে এক বছর পূর্ণ হতো পরাগ আগারওয়ালের। কিন্তু তার আগেই ছাঁটাই করে দেওয়া হলো টুইটার থেকে। বৃহস্পতিবার বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক টুইটারের মালিকানা নিজের হাতে নেওয়ার সাথেসাথেই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটির সিইও পরাগ আগারওয়ালসহ শীর্ষ চার কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেছেন। তবে চাকরি হারালেও পরাগ আগারওয়াল ক্ষতিপূরণ হিসেবে মাস্কের কাছ থেকে ৪২ মিলিয়ন ডলার পেতে যাচ্ছেন বলে খবর এনডিটিভির।
২০২১ সালের নভেম্বরে টুইটারের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি ভারতীয় বংশোদ্ভূত পরাগ আগারওয়ালকে প্রতিষ্ঠানটির সিইও হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর সময়টা ভালোই যাচ্ছিলো পরাগের, কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিলে টুইটার কেনার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন ইলন মাস্ক। এরপর থেকেই চলছিল টুইটার ও মাস্কের মধ্যে দীর্ঘ আইনি লড়াই, যেখানে শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছেন মাস্ক। তবে শুরু থেকেই টুইটারের পরিচালনায় যারা রয়েছেন, তাদের নিয়ে মাস্কের অসন্তোষের কথা জানা গিয়েছিল। তারই জের ধরে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে পরাগকে।
টুইটারে পরাগ আগারওয়ালের উত্থান ছিল দেখার মতো। ২০১১ সালে টুইটারে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন পরাগ। কয়েক বছরের মধ্যেই ২০১৭ সালের অক্টোবরে এক লাফে প্রতিষ্ঠানটির 'চিফ টেকনোলজি অফিসার' (সিটিও) পদে নিযুক্ত হন তিনি। এরপর গত বছরের নভেম্বরে টুইটারের সিইও হিসাবে পদোন্নতি ঘটে পরাগের।
পরাগকে রাতারাতি সরিয়ে দিলেও এর জন্য মোটা অংকের ক্ষতিপূরণও দিতে হবে মাস্ককে। গবেষণা সংস্থা 'ইক্যুইলার' জানিয়েছে, মালিকানা বদলের ১২ মাসের মধ্যে যদি পরাগকে বরখাস্ত করা হয়, তাহলে প্রায় ৪২ মিলিয়ন ডলার দিতে হবে তাকে।
১৯৮৪ সালের ২১ মে রাজস্থানের আজম আজমেঢ়ে জন্মগ্রহণ করা পরাগ আগারওয়ালের বাবা ছিলেন ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাটমিক এনার্জি-এর শীর্ষ আধিকারিক। মা অর্থনীতির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। ২০০১ সালে মুম্বাইয়ের অ্যাটমিক এনার্জি জুনিয়র কলেজ থেকে উত্তীর্ণ হন পরাগ। ওই বছরই তুরস্কে 'ইন্টারন্যাশনাল ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে' স্বর্ণপদক পান তিনি। ২০০৫ সালে আইআইটি বম্বে থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিটেক করেন।
আইআইটি বম্বের পর পরাগের গন্তব্য ছিল স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পিএইচডি করেন। স্ট্যানফোর্ডে পিএইচডি সম্পন্ন করার পর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে টুইটারে যোগ দেন পরাগ। পরাগের সেই দীর্ঘ সফর ২৭ অক্টোবর আচমকাই শেষ হয়ে গেছে।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত পরাগের দুই সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রীর নাম বিনীতা আগারওয়াল। দ্বিতীয় সন্তান হওয়ার পর টুইটারের সিইও হিসাবে পিতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন পরাগ।