গড় মানুষের তুলনায় বিলিয়নেয়ারদের গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের হার কয়েক লাখ গুণ বেশি
অন্য যেকোনো মানুষের তুলনায় বিলিয়নেয়াররা কয়েক লাখ গুণ বেশি গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গত করে বলে জানাচ্ছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ১২৫ বিলিয়নেয়ারের বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই ফলাফল জানা গেছে। খবর সিএনএনের।
সোমবার ব্রিটিশ অলাভজনক সংস্থা অক্সফামের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে এই তথ্য।
প্রতিবেদন অনুসারে, গড় মানুষের তুলনায় ধনী ব্যক্তিদের বিনিয়োগে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত গ্রিনহাউজ নিঃসরণ বাড়ে।
এছাড়া বিনিয়োগকারী খাতগুলো থেকে এই বিলিয়নেয়াররা প্রত্যেকে বছরে গড়ে ৩০ লাখ মেট্রিক টন কার্বন নিঃসরণ করে। অথচ শীর্ষ ১০ শতাংশ ধনী বাদ দিলে বাকি ৯০ শতাংশ মানুষের নিঃসরণকৃত গ্যাসের পরিমাণ বছরে গড়ে মাত্র ২.৭০ টন। শীর্ষ ধনীরা যার থেকে ১০ লাখ গুণ বেশি নিঃসরণ করছে।
অক্সফামের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্রধান নাফকোট ডাবি বলেন, বিলিয়নেয়ারদের বিলাসী জীবনধারা, ব্যক্তিগত জেট ও ইয়ট ব্যবহার থেকে এমনিতেই গড় মানুষের তুলনায় কয়েক হাজার গুণ বেশি কার্বন নিঃসরণ হয়।
কিন্তু তাদের বিনিয়োগসমূহ হিসাবে আনলে নিঃসরণের হার ১০ লাখ গুণেরও বেশি।
এই গুটিকয়েক বিলিয়নেয়ার মিলে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করছে তা ফ্রান্স, মিশর বা আর্জেন্টিনার মতো সমগ্র দেশের বার্ষিক কার্বন ফুটপ্রিন্টের সমান।
জলবায়ু নীতি নিয়ে আলোচনার সময় কার্বন নিঃসরণের জন্য ধনী ব্যক্তিদের খুব কম সময়ই দায়ী করা হয়। অথচ কার্বন নিঃসরণের পেছনে তাদের ভূমিকা ব্যাপক ও দিনদিন তা আরও বাড়ছে। এই অবস্থা এবার বন্ধ হওয়া উচিত।
'কর্পোরেট পিরামিডের শীর্ষে থাকা বিলিয়নেয়ারদের জলবায়ু পরিবর্তনের দায়ভার নিতে হবে। জবাবদিহিতার হাত থেকে পালিয়ে বাঁচা অনেক হয়েছে,' বলেন তিনি।
সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে, বিলিয়নেয়াররা তাদের বিনিয়োগের গড়ে প্রায় ১৪ শতাংশই জ্বালানি ও সিমেন্টের মতো পরিবেশ দূষণকারী বিভিন্ন খাতে ব্যয় করে। নমুনার ২৫ জনের মধ্যে মাত্র একজন নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রতিষ্ঠানে ব্যয় করেছেন।
ডাবি বলেন, 'বড় কর্পোরেট ও ধনী বিনিয়োগকারীরা মুনাফার জন্য দূষণের সৃষ্টি করছে, যা বৈশ্বিক জলবায়ু সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। কপ-২৭ সম্মেলনে এই বিষয়গুলোর ওপর আলোকপাত করার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা পরিবর্তনে আলোচনা প্রয়োজন।'