পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ মারা গেছেন
দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
'অ্যামিলয়ডোসিস' নামক এক বিরল রোগে ভুগছিলেন সাবেক এই সেনাপ্রধান।
পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়েছে, তার মৃত্যুতে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তর গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে।
গত বছরের জুনে প্রায় তিন সপ্তাহের মতো হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন পারভেজ মোশাররফ।
সে সময় তার পরিবার পারভেজ মোশাররফের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এক বিবৃতিতে জানায়, "কঠিন এক পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তিনি, যেখান থেকে আরোগ্যলাভ সম্ভব নয়। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোও ঠিকমতো কাজ করছে না। তিনি যেন স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনধারণ করতে পারেন, সে প্রার্থনা করুন।"
পাকিস্তানি, ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মৃত্যুসংবাদের গুজব ছড়িয়ে পড়লে পরিবারের পক্ষ থেকে তখন এই বিবৃতি দেয়া হয়।
অবসরপ্রাপ্ত এই জেনারেলের অসুস্থতার কথা প্রথম জনসম্মুখে আসে ২০১৮ সালে। পারভেজ মোশাররফের রাজনৈতিক দল অল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এপিএমএল) জানায়, তিনি এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
দলটির ওভারসিজ প্রেসিডেন্ট আফজাল সিদ্দিকী জানিয়েছিলেন, মোশাররফের স্নায়ুবিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তিনি তখন লন্ডনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
অ্যামিলয়ডোসিস এমন এক বিরল রোগ যেখানে দেহের অঙ্গ এবং টিস্যুতে অ্যামাইলয়েড নামক একটি অস্বাভাবিক প্রোটিন তৈরি হতে থাকে। এতে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং টিস্যুগুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে।
২০১৩ সালে পাকিস্তান মুসলিম লীগ ক্ষমতায় এলে মোশাররফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয় এবং ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ তাকে এ মামলায় প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।
পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় পারভেজ মোশাররফকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।
২০১৪ সালে চিকিৎসার প্রয়োজনে দেশের বাইরে যাবার অনুমতি দেয়ার পর থেকেই দুবাই ও লন্ডনে বাস করছিলেন পারভেজ মোশাররফ। বারবার আদালতের আদেশের পরও আর দেশে ফেরেন নি তিনি।