বিবিসির দিল্লি ও মুম্বাই কার্যালয়ে আয়কর কর্মকর্তারা, চলল রাতভর জরিপ
গতকাল সকালে শুরু হওয়া 'সার্ভে' বা জরিপ চলেছে রাতভর। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত বিবিসির দিল্লি ও মুম্বাই কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন ভারতের আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা।
জানা গিয়েছে, জরিপ চলাকালীন বেশ কিছু ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সংস্থার অফিসে থাকা সব কম্পিউটার এবং ল্যাপটপ নাকি স্ক্যান করছেন কর্মকর্তারা।
অভিযানের প্রায় ২০ ঘণ্টা পার হলেও বিবিসির অফিস থেকে কোনও নথি বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে জানায়নি আয়কর দপ্তর। তবে জানা গেছে, আয়কর কর্মীরা ২০১২ সাল থেকে বিবিসির সমস্ত লেনদেনের তথ্য খতিয়ে দেখছেন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ দিল্লি এবং মুম্বাইয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র দপ্তরে পৌঁছেন ভারতীয় আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা। অফিসে ঢুকেই বিবিসির সমস্ত সাংবাদিক এবং সংবাদকর্মীদের মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ জমা দিতে বলেন তারা।
প্রাথমিকভাবে এটি নিয়ে মুখ না খুললেও পরে একটি টুইটের মাধ্যমে আয়কর দপ্তরকে সহযোগিতার বার্তা দিয়েছিল বিবিসি। রাতে আরও একটি টুইট করে বিবৃতি জারি করে বিবিসি।
ব্রিটিশ সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, 'দিল্লি এবং মুম্বাইয়ে বিবিসির অফিসে এখনও রয়েছেন আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা। অনেক কর্মী তাদের বাড়িতে চলে গিয়েছেন। অনেক কর্মচারী অফিসেই রয়েছেন কর্মকর্তাদের সাহায্য করার জন্য। এই পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের কর্মচারীদের যথাসম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করছি। এদিকে আমাদের সাংবাদিকতা জারি রয়েছে। ভারতে আমাদের দর্শকদের সামনে আমরা খবর পরিবেশন জারি রাখব।'
এদিকে বিবিসির অফিসে আয়কর দপ্তরের সার্ভে নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি জারি করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড অব ইন্ডিয়া। প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়ার তরফেও সার্ভের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। গিল্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'সরকারের সমালোচনা করা সংবাদমাধ্যমগুলোকে ভয় দেখানো এবং হেনস্তা করার জন্য সরকারি সংস্থাকে ব্যবহারের এই প্রবণতায় আমরা উদ্বিগ্ন।'
প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগেই ২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা নিয়ে দুই ভাগে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছিল বিবিসি। ভারত সরকার সেই তথ্যচিত্রটিকে ইউটিউব এবং টুইটারে ব্লক করেছিল। এই আবহে বিবিসির অফিসে আয়কর দপ্তরের এই সার্ভে নিয়ে তোলপাড় দেশটির জাতীয় রাজনীতি। একদিকে যেখানে বিজেপি বিবিসির বিরুদ্ধে 'বিষ ছড়ানোর' অভিযোগ তুলেছে, সেখানে কংগ্রেসের অভিযোগ, দেশে 'অলিখিত জরুরি অবস্থা' চলছে।