নিজেদের ৬ অস্ত্রের বৈশ্বিক রপ্তানি চাহিদা থাকার দাবি রাশিয়ার
২০২৩ সালের অ্যারো ইন্ডিয়া প্রদর্শনীতে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিরক্ষা শিল্প-প্রতিষ্ঠান রসোবরোনএক্সপোর্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলেক্সান্ডার মিখেয়েভ জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে বৈদেশিক বিভিন্ন শক্তি রাশিয়ার বেশকিছু অস্ত্রব্যবস্থার প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে। খবর দ্য ইউরেশিয়ান টাইমস-এর।
এসব অস্ত্রের তালিকায় রয়েছে কেএ-৫২ই ও এমআই-১৭১এসএইচ হেলিকপ্টার, সুখোই সু-৫৭ই এবং সু-৩৫ যুদ্ধবিমান, ইস্কান্দার-ই ট্যাকটিক্যাল মিসাইল ব্যবস্থা, এবং টি-৯০এম ট্যাংক।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে রাশিয়া। তার প্রভাব পড়ে দেশটির প্রতিরক্ষা শিল্পখাতের ওপরও। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এখন সামরিক সরঞ্জামের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারছে রাশিয়া।
মিখেয়েভ জানান, রাশিয়ার সেনাবাহিনী থেকে সরবরারে চাহিদা থাকলেও তার প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক পরিকল্পনা মোতাবেক রপ্তানি আদেশ পূর্ণ করার পথেই আছে।
মিসাইল
ইউক্রেনে রাশিয়ার যথেষ্ট পরিমাণে ব্যবহার করা কাটিং-এজ প্রযুক্তির একটি মিসাইল ইস্কান্দার-এম। ৪০০ কিলোমিটার পাল্লার এ মিসাইল পারমাণবিক অস্ত্রও বহন করতে সক্ষম।
এ মিসাইলের জ্যামার শত্রুপক্ষের রাডারকে অন্ধ করে দিতে পারে। যুদ্ধে এর সফলতার পর গত বছরের ডিসেম্বর মাসে রাশিয়া মিসাইলটি বেলারুশের কাছে সরবরাহ করেছিল।
এ মিসাইলটির রপ্তানিযোগ্য সংস্করণের ওপর বিশ্বের কয়েকটি দেশ আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানা গেছে। রপ্তানির জন্য এর পাল্লাকে কমিয়ে ২৮০ কিলোমিটার করা হয়েছে। এর আগে এটি আর্মেনিয়া ও আলজেরিয়ার কাছে রপ্তানি করেছিল রাশিয়া।
হেলিকপ্টার
বর্তমান যুদ্ধে রাশিয়া বিপুল পরিমাণে দুই ধরনের হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে। এর একটি হলো কেএ-৫২ অ্যালিগেটর ও অন্যটি এমআই-১৭১এসএইচ।
অ্যালিগেটর ভূমিতে হামলা চালাতে সক্ষম একটি অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার। রাশিয়া এটি ব্যবহার করছে ইউক্রেনের ট্যাংক ও পদাতিক সেনার ওপর আক্রমণ চালাতে। এ হেলিকপ্টারের রপ্তানিযোগ্য সংস্করণটি হচ্ছে কেএ-৫২ই।
অন্যদিকে এমআই-১৭১এসএইচ একটি সামরিক পরিবহন হেলিকপ্টার। এটিকে যুদ্ধক্ষেত্রে মিশন পরিচালনার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে চীনের ঝুহাই এয়ার শোয়ে এ দুই ধরনের হেলিকপ্টার প্রদর্শন করা হয়েছিল।
যুদ্ধবিমান
রাশিয়া এর সু-৫৭ ও সু-৩৫ যুদ্ধবিমানও বিভিন্ন দেশের কাছে রপ্তানি করতে আগ্রহী। রাশিয়ার বিমানবাহিনীর অন্যতম শক্তি সু-৩৫ যুদ্ধবিমান।
দুই আসন ও দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট সু-৩৫ যুদ্ধবিমানও ইউক্রেনযুদ্ধে বিস্তৃতপরিসরে ব্যবহার করেছে রাশিয়া। যুদ্ধের শুরু থেকেই সু-৩৫কে ময়দানে দেখা গেলেও কেবল গত বছরের শেষ দিকে রাশিয়ার পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমান সু-৫৭ ইউক্রেনে ব্যবহার করার বিষয়ে জানা যায়।
শোনা গেছে, রাশিয়া ইরানকে দুই ডজেন সু-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি করছে। এ দুটি দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব রয়েছে।
ট্যাংক
তালিকায় সর্বশেষ যুদ্ধাস্ত্রটি হচ্ছে রাশিয়ার টি-৯০এম ট্যাংক। এটি টি-৯০ ট্যাংকের একটি আপগ্রেড করা সংস্করণ।
টি-৯০এম ট্যাংকে রেলিক্ট এক্সপ্লোসিভ রিয়্যাক্টিভ আর্মার, আরও শক্তিশালী অস্ত্র, উন্নততর প্রাথমিক সেন্সর ও গোলাবর্ষণ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা রয়েছে।
এ ট্যাংকটিতে পারমাণবিক, জৈবিক, ও রাসায়নিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে সুরক্ষাব্যবস্থা এবং স্বয়ংক্রিয় ফায়ার সাপ্রেশন ব্যবস্থাও আছে।
ইউক্রেন ছাড়াও অন্য যুদ্ধে টি-৯০ ট্যাংক ব্যবহার করা হয়েছে। বর্তমান যুদ্ধে ইউক্রেনের ট্যাংকবিধ্বংসী কামান ও মিসাইলের কাছে একাধিক টি-৯০ ট্যাংক হারিয়েছে রাশিয়া।