ইউক্রেনে কার্যকরী হবে না আব্রামস ট্যাংক: মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান মনে করেন, ইউক্রেনে আব্রামস ট্যাংক কোনো কাজে আসবে না। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বুলগেরিয়ান মিলিটারি ডটকম নামক একটি সমর বিষয়ক ওয়েবসাইট।
সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুলিভান জানিয়েছেন, ইউক্রেনে আব্রামস ট্যাংক পাঠালে তা-তে বিশেষ ফল হবে না বলে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে মত প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা।
অর্থাৎ, ইউক্রেনের জন্য জার্মানির লেপার্ড ট্যাংকই সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
তবে ওয়াশিংটন ইউক্রেনে কখনো আব্রামস পাঠাতে চায়নি। কিয়েভের জন্য যে ৩১টি আব্রামস ট্যাংকের সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা ছিল মূলত জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার একটি কূটনৈতিক চুক্তির অংশ।
প্রতিবেশী ও ন্যাটোর মিত্রদেশসমূহ, এবং বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাজনৈতিক চাপের কারণে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ লেপার্ড ট্যাংক ইউক্রেনে পুনঃরপ্তানি করতে রাজি হন। শর্ত ছিল, ওয়াশিংটনও আব্রামস পাঠিয়ে একই কাজ করবে।
তবে আব্রামস ট্যাংক কখন ও কীভাবে ইউক্রেনে পৌঁছাবে — এসব ব্যাপারে ভাবেনি জার্মানি। ফলে সামনের মাসগুলোতে হয়তো দেখা যাবে, কেবল জার্মানির লেপার্ড ট্যাংক ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে আছে অথবা শত্রু ট্যাংককে ধ্বংস করছে, আব্রামসের কোনো উপস্থিতি নেই।
গত দুই সপ্তাহ আগেও যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছিল, ইউক্রেনের কাছে আব্রামস এ বছরের শেষ নাগাদ পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এ সপ্তাহেই ওয়াশিংটন জানিয়েছে, এসব ট্যাংক পাঠানোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য ১২ মাসের বেশি সময় লাগতে পারে।
ওয়াশিংটনের সামনে আরও একটি প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। যদিও মাত্র ৩১টি আব্রামস পাঠানোর কথা বলা হয়েছে, এ ট্যাংকগুলো বাছাই করতেও দেশটির অনেক সময়ের প্রয়োজন হবে।
ওয়াশিংটন প্রযুক্তির বিষয়টিও চিন্তা করবে। ইউক্রেনে কোন প্রযুক্তির, কোন সংস্করণ ও কনফিগারেশনের ট্যাংক পাঠানো হবে, তা নিয়েও ভাবতে হবে দেশটিকে। আর যা-ই হোক, যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশে যেসব আব্রামস ট্যাংক পরিচালনা করে, ইউক্রেনে একই সংস্করণের ট্যাংক দেশটি কখনোই পাঠাবে না।
রাশিয়ার হাতে কোনো সংবেদনশীল প্রযুক্তি যেন না পড়ে, তার জন্য ওয়াশিংটনকে ঠিক করতে হবে, ইউক্রেনে পাঠানো আব্রামস ট্যাংকগুলো থেকে কোন কোন প্রযুক্তি সরিয়ে নিতে হবে। অর্থাৎ, এর ফলে আব্রামসের যুদ্ধক্ষমতাও অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
আব্রামস ট্যাংকগুলো জার্মান ও রাশিয়ান ট্যাংকের চেয়ে অনেক ভারী। অন্যদিকে ইউক্রেনের সেতুগুলো তৈরি করা হয়েছে হালকা ধরনের সোভিয়েত ও রাশিয়ান ট্যাংকের কথা চিন্তা করে। তাই দেশটিতে আব্রামস পরিচালনায় এটি আরেকটি বড় বাধা।