জি২০ সম্মেলনে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়, পশ্চিমাদের কড়া সমালোচনা লাভরভের
জি২০ সম্মেলনে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে। আয়োজক ভারত বলেছে, অনৈক্যের অর্থ হলো কোনো যৌথ বিবৃতি দেওয়া যাবে না। খবর বিবিসির।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, রাশিয়ার 'অন্যায়' যুদ্ধের কারণে সম্মেলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর প্রভাব ফেলছে এমন সব ইস্যুর ওপর গুরুত্ব দিতে চেয়েছিল ভারত, কিন্তু ইউক্রেন নিয়ে মতবিভেদের অবসান ঘটানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছে দেশটি।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, 'আমরা চেষ্টা করেছি, কিন্তু দেশগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য অনেক বেশি।'
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ১৯ দেশ ও ইউরপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) জোট জি২০-এর অবদান ৮৫ শতাংশ।
ভারতের সভাপতিত্বে জি২০-ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন হচ্ছে দিল্লিতে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে আছে রাশিয়ার সার্গেই লাভরভ, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও চীনের কিন গ্যাং। যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম সামনাসামনি কোনো বৈঠকে এলেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সম্মেলনের এক ফাঁকে লাভরভের সঙ্গে ১০ মিনিটের বৈঠক করেন ব্লিঙ্কেন। সেখানে ব্লিঙ্কেন বলেন, 'যতদিনই লাগুক না কেন', পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেনের পাশে থাকবে। ব্লিঙ্কেন রাশিয়াকে কদিন আগে বেরিয়ে যাওয়া নিউ স্টার্ট পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে ফিরে আসার জন্যও চাপ দেন। একজন সিনিয়র স্টেট ডিপার্টমেন্ট কর্মকর্তা এসব তথ্য জানান।
তবে রুশ কর্মকর্তারা কোনো আলোচনা হওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। এর আগে রাশিয়াও পশ্চিমের বিরুদ্ধে শস্য রপ্তানি চুক্তি 'বানচালের' অভিযোগ আনে।
এদিকে পশ্চিমা সমালোচকদের ধুয়ে দিলেন লাভরভ।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ জি২০-এর কিছু সদস্যের কর্মকাণ্ডের জন্য ভারতের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, ওই সদস্য দেশগুলো রাশিয়ার ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। খবর আরটি-র
লাভরভ বলেন, মস্কোর সমালোচনাকারীরা কখনও মধ্যপ্রাচ্যে ওয়াশিংটনের অভিযানের সমালোচনা করেনি।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, 'অবৈধ নিষেধাজ্ঞা, বাজারের ফায়দা লোটা, মূল্যসীমা বেঁধে দেওয়ার' বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া পশ্চিমা নীতি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক খারাপ করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে অন্তর্ঘাত চালানোর জন্যও পশ্চিমা দুনিয়াকে দায়ী করেন লাভরভ।
এদিকা রাশিয়ার কর্মকর্তারা বলেছেন, মস্কো ও বেইজিং একসঙ্গে 'পশ্চিমা ব্ল্যাকমেইল ও হুমকির' মোকাবিলা করতে একমত হয়েছে। যদিও চীন বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
লাভরভ বলেন, 'আমরা সৌজন্যের কথা বলি। কিন্তু আমাদের পশ্চিমা বন্ধুদের মধ্যে এটি নেই। তারা আর কূটনীতি নিয়ে ভাবছে না। তারা এখন অন্যদের শুধু ব্ল্যাকমেইল করে ও হুমকি দেয়।'
উল্লেখ্য, ইউক্রেন-রাশিয়া ইস্যু নিয়ে মতবিরোধের কারণে গত সপ্তাহে বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত জি২০-এর অর্থমন্ত্রীদের সম্মেলনে সমাপনী বিবৃতি দেওয়া যায়নি।