বিশ্বের সবচেয়ে অসুখী দেশে ভারত! যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের চেয়েও পিছিয়ে
প্রতিবছর ২০ মার্চ 'সুখ দিবস' এর প্রাক্কালে সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করে জাতিসংঘ। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত বরাবরই সবচেয়ে কম সুখী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে। সোমবার ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট-এর প্রকাশিত ২০২৩ সালের সুখী দেশের তালিকায় ১৩৭টি দেশের মধ্যে ১২৬তম স্থান অধিকার করেছে দেশটি। খবর ইয়াহু ফাইন্যান্স এর।
সুখী দেশের তালিকায় নেপাল, চীন, বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোর চাইতেও ভারতের অবস্থান নিচে। শুধু তাই নয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইউক্রেনের চেয়েও কম সুখী দেশ ভারত।
প্রতিটি দেশের জনসংখ্যার মধ্য থেকে প্রাপ্তবয়স্কদের একটি রিপ্রেজেন্টেটিভ স্যাম্পল বা নমুনার জরিপ চালিয়ে তাদের জীবনমান মূল্যায়ন করে গ্যালআপ ওয়ার্ল্ড পোলস। তাদের এই মূল্যায়ন ব্যবহার করেই ২০২০-২০২২ সাল সময়কালের বার্ষিক প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারিকালে নাগরিকদের মধ্যে সামাজিক সহায়তা ও সংযোগের অভাবকে ভারতের এ বিপর্যয়ের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মহামারির সময় লকডাউন দেওয়ার ফলে লাখ লাখ ভারতীয় সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। ফলে এসময় তাদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বিগ্নতার মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক সংযোগের অভাব, সেই সঙ্গে বেকারত্ব, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির পরিস্থিতি এবং স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে উদ্বিগ্নতা- এই সবকিছু সাধারণ জনগণের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলেছে।
২০২২ সালে গ্যালআপ, মেটা ও একাডেমিক উপদেষ্টাদের পরিচালিত 'স্টেট অব সোশ্যাল কানেকশনস' গবেষণায় বলা হয়েছে, "আশেপাশের বন্ধুবান্ধব-স্বজনদের সঙ্গে ভারতীয়দের দৈনন্দিন মিথস্ক্রিয়া সবচেয়ে কম হলেও, দূরের আত্মীয়স্বজন-বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে তাদেরই মিথস্ক্রিয়ার মাত্রা বেশি।" এছাড়াও, ভারতে পরিবার ও সামাজিক সহায়তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পর্ক ছিল না।
প্রায় ৫৫ শতাংশ ভারতীয় নারী জানিয়েছেন, বিগত সাতদিনে তারা কর্মক্ষেত্রে বা স্কুলে 'কখনোই' বাইরের মানুষের সাথে মিথস্ক্রিয়া করেননি। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোও এক্ষেত্রে ভারতীয়দের কাজে আসেনি।