পেন্টাগনের নথি ফাঁসকারীকে গ্রেপ্তারের সময় তিনি বই পড়ছিলেন
পেন্টাগনের প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত কয়েক ডজন গোপন নথি ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত থাকার সন্দেহে দেশটির বিমানবাহিনীর এয়ার ন্যাশনাল গার্ডের একজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় জ্যাক টেশেইরা নামের ওই যুবক পোর্চে বসে বই পড়ছিলেন। খবর বিজনেস ইনসাইডারের।
বোস্টনভিত্তিক সংবাদ চ্যানেল ডব্লিউসিভিবি-টিভির ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ফেডারেল এজেন্টরা যখন জ্যাক টেশেইরাকে গ্রেপ্তার করতে আসেন, তখন তিনি পোর্চে বসে বই পড়ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বলেন, অনুমতি ছাড়া জাতীয় প্রতিরক্ষাবিষয়ক গোপন নথি সরানো, সংগ্রহ, ও এর তথ্য পাচারের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার সন্দেহে টেশেইরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
টেশেইরার পরিচয় প্রথম প্রকাশ করে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। ধারণা করা হচ্ছে, গেমার মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম ডিসকর্ডের প্রাইভেট গ্রুপ থাগ শেকার সেন্ট্রালের নেতা তিনি।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনের বেরিয়ে এসেছে, 'ওজি' ছদ্মনামের একজন গ্রুপ মেম্বার—সম্ভবত টেশেইরা—২০২২ সালের শেষের দিকে থাগ শেকার সেন্ট্রালে গোপন নথিগুলো শেয়ার করা আরম্ভ করেন। ওয়াশিংটন পোস্টে ওজিকে বন্দুকপ্রেমী উল্লেখ করা হয়।
অনলাইন বন্ধুদের দেওয়া সর্বশেষ মেসেজে ওজি বলেন কিছুদিন গা-ঢাকা দিয়ে থাকতে এবং তাকে জড়ানো যেতে পারে এমন যেকোনো তথ্য মুছে ফেলতে।
টেশেইরাকে যখন গ্রেপ্তার করতে যাওয়া হয়, তখন তিনি শান্তভাবে একটি বই নিয়ে বসে ছিলেন। বিনাবাধায় তাকে গ্রেপ্তার করেন ফেডারেল এজেন্টরা।
টেশেইরাকে গ্রেপ্তারের সময় ঘটনাস্থলে উৎসুক মানুষজনের ব্যাপক ভিড় জমে যায়।
জ্যাক ডগলাস টেশেইরা ২০১৯ সালে মার্কিন বিমানবাহিনীর এয়ার ন্যাশনাল গার্ডে যোগ দেন। আইটি বিশেষজ্ঞ টেশেইরা বিমানবাহিনীতে সাইবার ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমস জার্নিম্যান হিসেবে কাজ করতেন। তার কর্মক্ষেত্র ছিল ম্যাসাচুসেটসের অটিস ঘাঁটিতে।
টেশেইরার কাজ ছিল নেটওয়ার্ক প্রতিরক্ষা ও অতিগোপনীয় তথ্যের শ্রেণিবিন্যাস করা। তাই গোপনীয় নথি দেখা ও ব্যবহারের সুযোগ পেতেন তিনি।
সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু গোপনীয় সামরিক নথি ফাঁস হয়ে যায়। ওইসব নথিতে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর যেমন নজরদারি করছে, তেমনি মিত্রদের ওপরও নজরদারি করছে।
ফাঁস হওয়া এসব নথির একটা বড় অংশই ইউক্রেন যুদ্ধ-সংক্রান্ত। এসব নথি ফাঁস হওয়ার ফলে ইউক্রেনীয় বাহিনী অসুবিধায় পড়তে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।
নথি ফাঁসের বিষয়টি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে ওয়াশিংটন।