বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২০২৭ সালের মধ্যে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে!
২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই এ তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রথমবারের মতো ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে। খবর বিবিসির।
জাতিসংঘের আবহাওয়া বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিকাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও)-এর প্রকাশিত রিপোর্টে এমন তথ্য উঠে এসেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে ৬৬ শতাংশ। এক্ষেত্রে মানবসৃষ্ট গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং আসন্ন এল নিনোর (উষ্ণ সামুদ্রিক স্রোত) প্রভাব মূল প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখবে।
তবে বিজ্ঞানীদের মতে, তাপমাত্রার এমন লাগামহীন বৃদ্ধির মেয়াদকাল হয়তো সাময়িকের জন্য হবে। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় ধরে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো উচ্চ হারে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঘটতে থাকলে সেটি মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনবে। যার ফলে অসহ্য তাপদাহ, তীব্র ঝড় এবং দাবানলের মতো দুর্যোগ ঘটতে পারে।
আগামীতে কোনো এক বছর তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গেলেই তার মাধ্যমে প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি ভঙ্গ হয়েছে এমনটা নয়। বরং এরপরেও যদি তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই উচ্চমুখী ধারা বজায় থাকে, তবে সেই লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি ভঙ্গ হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যাবে। তাই বিজ্ঞানীরা মনে করেন, গ্রিন হাউজ গ্যাসের নিঃসরণ কমিয়ে এখনো বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে লাগাম টানা সম্ভব।
ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিকাল অর্গানাইজেশনের মতে, ২০২০ সালে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল ২০ শতাংশ। গত বছর সে সম্ভবনা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ শতাংশে। আর সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্টের বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির এ সম্ভবনা পৌঁছেছে ৬৬ শতাংশে!
প্যারিস চুক্তি অনুযাযী, প্রাক শিল্প যুগ অর্থাৎ ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত সময়ের তুলনায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে পুনরায় পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেলেই সেটি বিপদজনক হবে।
গত কয়েক দশকের ক্রমাগত গ্রিন হাউজ গ্যাসের নিঃসরণ বৃদ্ধির ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ ১.২৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে পৌঁছায়। আর গত বছর প্রাক শিল্পযুগের তুলনায় ১.১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি তাপমাত্রা ছিল।