সেলফি তুলতে গিয়ে পানিতে ফোন, বাঁধের জলাধার সেচলেন ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তা
সেলফি তুলতে গিয়ে রাজেশ বিশ্বাস নামের ভারতীয় এক সরকারি কর্মকর্তার ফোন ভুলবশত বাঁধের জলাধারে পড়ে যায়। ১২০০ ডলার মূল্যের সেই ফোনটি তুলতে ডিজেল পাম্প ব্যবহার করে জলাধারের অনেকাংশ সেচে ফেলেন এ ফুড ইন্সপেক্টর। খবর বিবিসির।
গত রবিবার (২১ মে) মধ্য ভারতের রাজ্য ছত্তিশগড় এ ঘটনা ঘটে। স্যামসাং ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনটি উদ্ধারে প্রথমে স্থানীয় ডুবুরি দিয়ে চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতেও ব্যর্থ হলে খেরকাট্টা নামের বাঁধের জলাধার থেকে প্রায় ২০ লাখ লিটার পানি নিষ্কাশন করেন তিনি।
তিন দিন ধরে চলে এই নিস্কাশন কাজ। অন্যদিকে এত চেষ্টা করে ফোনটি উদ্ধার করেও কাজ হয়নি; বরং এত সময় ধরে পানিতে থাকায় ফোনটি অকেজো হয়ে গিয়েছে।
অবশ্য রাজ্যের কাঙ্কের জেলার কৈলিবেদা ব্লকের এ ফুড ইন্সপেক্টরের দাবি, ফোনটিতে সরকারি সংবেদনশীল তথ্য থাকায় তিনি এমনটি করেছেন। এমনকি জলাধারের 'অল্প পানি' সেচে নিকটবর্তী খালে ফেলার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মৌখিক অনুমতিও নিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। এছাড়া অতিরিক্ত এ পানি কৃষকদের উপকারে আসবে বলেও মনে করেন অভিযুক্ত এ কর্মকর্তা।
পানি নিষ্কাশন চলাকালীন সময়ে অভিযোগ করা হলে পানি সম্পদ বিভাগের এক কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কার্যক্রমটি বন্ধ করেন। একইসাথে পদের অপব্যবহারের অভিযোগে ইতোমধ্যেই রাজেশ বিশ্বাসকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
কাঙ্কের জেলার প্রিয়াঙ্কা শুকলা নামের এক কর্মকর্তা বলেন, "তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পানি খুবই অপরিহার্য একটি সম্পদ। এটি এভাবে নষ্ট করা যেতে পারে না।"
তবে অভিযুক্ত কর্মকর্তা রাজেশ বিশ্বাস অবশ্য নিজ পদের অপব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বরং তিনি জানান, বাঁধের অতিরিক্ত পানির সেকশন থেকে তিনি পানি নিষ্কাশন করেছেন। এই পানিগুলো অব্যবহারযোগ্য ছিল।
অন্যদিকে সরকারি কর্মকর্তার বিতর্কিত এ কর্মকাণ্ড নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা। রাজ্যটির বিরোধী দলে থাকা বিজেপির জাতীয় কমিটির এক ভাইস-প্রেসিডেন্ট এ নিয়ে টুইটও করেছেন।
বিজেপির ঐ নেতা বলেন, "গ্রীষ্ম মৌসুমে তীব্র গরমে মানুষ পানির জন্য এ ট্যাংকারের ওপর নির্ভরশীল। সরকারি কর্মকর্তা ৪১ লাখ লিটার পানি নিষ্কাশন করেছেন। এ পানি দিয়ে ১৫০০ একর জমিতে সেচ দেওয়া যেত।"