এআই মডেল প্রশিক্ষণে বই চুরি বন্ধ করতে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে খোলা চিঠি কয়েক হাজার লেখকের
জিপিটি-৪- দ্বারা পরিচালিত কোনো চ্যাটবটকে আপনি যদি বিখ্যাত কোনো লেখকের মতো করে কিছু লিখতে বলেন, তাহলে সে কাজটা খুব ভালোভাবেই করতে পারবে এটি। এর কারণ হচ্ছে, এসব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেলকে এ লেখকদের লেখা দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
এ কারণে লেখকদের লিখনশৈলীকে খুব সহজেই নকল করতে পারছে এগুলো। কিন্তু লেখকেরা চ্যাটজিপিটির মতো চ্যাটবটের এ সক্ষমতা নিয়ে একেবারেই খুশি নন।
চ্যাটজিপিটি, বার্ড-এর মতো এআই ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলগুলোর স্রষ্টা বিভিন্ন প্রযুক্তিকোম্পানি বিনা অনুমতিতে বা কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ ছাড়াই লেখকদের লেখা তাদের ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলকে প্রশিক্ষণ দিতে ব্যবহার করেছে। আর এক খোলা চিঠিতে এ কাজের কড়া সমালোচনা করেছেন ফিকশন, নন-ফিকশন, ও কবিতার প্রায় সাড়ে আট হাজারের বেশি লেখক।
"কপিরাইট থাকা লাখো বই, নিবন্ধ, প্রবন্ধ, ও কবিতা এসব এআই ব্যবস্থার জন্য 'খাবার' সরবরাহ করে। অফুরন্ত এ ভোজের জন্য কেউ দুপয়সাও খরচ করেনি," ওই চিঠিতে বলা হয়।
এআই চ্যাটবটগুলো এসব লেখকদের খুব সহজেই অনুকরণ করতে পারলেও এটি কীভাবে সম্ভব হলো তা নিয়ে কোনো তথ্য কখনো প্রকাশ করেনি কোম্পানিগুলো। বইয়ের অংশ বা বই পর্যালোচনার লেখা ব্যবহার করে এ মডেলগুলোকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে? লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে এসে প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে নাকি কোম্পানিগুলো লিবজেন-এর মতো ওয়েবসাইট থেকে অবৈধভাবে বই ডাউনলোড করেছে?
তবে একটি বিষয় স্পষ্ট — এ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো কোনো প্রকাশনীর কাছে গিয়ে বই ব্যবহারের অনুমতি নেয়নি। লেখকেরা তাদের চিঠিতে দাবি করেছেন, এভাবে তাদের লেখাকে এআই মডেলের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার কারণে বাজারে মধ্যমমানের, যন্ত্রের লেখা বই-গল্প ইত্যাদি ছড়িয়ে পড়েছে যা লেখকদের পেশাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
চিঠিতে লেখকেরা উল্লেখ করেন, নতুন লেখকদের জন্য এ পরিস্থিতি একেবারেই প্রতিকূল।
চিঠিতে কোম্পানিগুলোকে কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে এআই-এর কাজের জন্য কপিরাইট থাকা আধেয় ব্যবহারের আগে অনুমতি নেওয়া এবং যেসব লেখকের লেখা আগে ব্যবহার করা হয়েছে বা বর্তমানে হচ্ছে, তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
এছাড়া বর্তমান আইনের পরিপন্থী হোক বা না হোক, এআই-এর আউটপুটে লেখকদের লেখা ব্যবহারের জন্য লেখকদেরকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতেও চিঠিতে কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান করেছেন লেখকেরা।
তবে আপাতত এআই কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কোনো প্রকার আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানি ভুক্তভোগী লেখকেরা।