মানুষের লেখার দক্ষতা নষ্ট করে দেবে এআই
কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাক্ষেত্রে লেখার কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের কারণে কয়েক দশকের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষের লেখার দক্ষতা নষ্ট হবে বলে সতর্ক করেছেন কম্পিউটার বিজ্ঞানী এবং লেখক পল গ্রাহাম।
ওয়াই কম্বিনেটর নামে একটি স্টার্ট-আপ অ্যাক্সিলারেটর এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্মের সহ-প্রতিষ্ঠাতা গ্রাহাম মনে করেন, এটি একটি সমস্যা তৈরি করবে কারণ লেখা মানেই চিন্তা করা।
তিনি বলেন, "অনেক মানুষের লেখায় সমস্যা তৈরির কারণ হলো, এটি মৌলিকভাবে একটি কঠিন কাজ। ভালো লেখার জন্য আপনাকে স্পষ্টভাবে চিন্তা করতে হবে। স্পষ্টভাবে চিন্তা করা কঠিন।"
এই বিষয়ে গ্রাহাম তার ওয়েবসাইটে গত সপ্তাহে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে আরও বিস্তারিত আলোচনা করেন।
গ্রাহাম প্রবন্ধে লিখেছেন, তবে প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে মানুষের পক্ষে এআইকে লেখার কাজে ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে। এখন লেখার পদ্ধতি শিখতে, কাউকে লেখার জন্য নিয়োগ দিতে বা অন্যের কাজ কপি করারও প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, "আমি সাধারণত প্রযুক্তি সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করতে নারাজ। কিন্তু এই বিষয়ে আমি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী: কয়েক দশকের মধ্যে অনেক মানুষ লিখতে পারবে না।"
গ্রাহাম বলেন, "নতুন প্রযুক্তি আসার সাথে সাথে পুরোনো দক্ষতা হারিয়ে যাওয়া সাধারণ ব্যাপার। যেমন, কামারের সংখ্যা কমে গেলেও এখন এটি কোনো সমস্যার মনে হয় না।" তবে তিনি মনে করেন, মানুষের লেখার অক্ষমতা একটি "খারাপ" বিষয়।
তিনি বলেন, "লিখতে পারা এবং লিখতে না পারার মধ্যে বিভক্ত একটি পৃথিবী যতটা বিপজ্জনক মনে হয়, এটি আসলে তারচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। এটি চিন্তা করা এবং চিন্তা না করার একটি পৃথিবীও হয়ে যাবে।"
তিনি আরও বলেন, "এটি নতুন কিছু নয়।" প্রাক-শিল্প যুগের কথা উল্লেখ করে গ্রাহাম বলেন, তখন "বেশিরভাগ কাজ মানুষকে শক্তিশালী রাখত।"
গ্রাহাম বলেন, "এখন, যদি আপনি শক্তিশালী হতে চান, আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে। এখনও শক্তিশালী মানুষ আছে; কিন্তু যারা কেবল শক্তিশালী হতে চায়, তারাই।"
তার মতে, লেখার ক্ষেত্রেও একই হবে। তিনি বলেন, "এখনও বুদ্ধিমান মানুষ থাকবে। কিন্তু কেবল তারাই, যারা বুদ্ধিমান হতে চায়।"
ডিজিটাল শিক্ষা কাউন্সিলের একটি সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, প্রায় ৮৬ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের পড়াশোনায় এআই ব্যবহার করছেন। তাদের মধ্যে ২৮ শতাংশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে লেখা প্যারাফেজ (পুনঃলিখন) করেন। ২৪ শতাংশ শিক্ষার্থী এআই ব্যবহার করে লেখার জন্য প্রথম খসড়া তৈরি করেন।