এবার সেদ্ধ চাল রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করল ভারত
সেদ্ধ চাল রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারত। এ শুল্ক তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশটির এ উদ্যোগের ফলে বিশ্বে চালের সরবরাহ কমতে পারে, একইসঙ্গে বিশ্ববাজারে বাড়তে পারে চালের দাম। ইতিমধ্যে চালের দাম ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে।
গত মাসেই ক্রেতাদের অবাক করে দিয়ে ব্যাপক-ব্যবহৃত অবাসমতী চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ভারত।
ওই নিষেধাজ্ঞার ফলে কিছু ক্রেতা সেদ্ধ চাল কেনা বাড়ায়। এর জেরে এ চালের দাম রেকর্ড উচ্চতায় উঠে যায় বলে জানান মুম্বাইয়ের এক ডিলার।
ওই ডিলার রয়টার্সকে বলেন, 'এই শুল্কারোপের ফলে ভারতের সেদ্ধ চাল থাইল্যান্ড ও পাকিস্তানের চালের মতোই দামি হয়ে যাবে। [বেশি দামে চাল কেনা ছাড়া] ক্রেতাদের এখন আর তেমন কোনো উপায় নেই।'
ভারত ২০২২ সালে ৭.৪ মিলিয়ন টন সেদ্ধ চাল রপ্তানি করেছিল।
জুলাইয়ে জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থার চালের মূল্য সূচক প্রায় ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছে। ভারত রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করার পর চাহিদা অনেক বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রধান রপ্তানিকারক দেশগুলোতে দাম বেড়ে যাওয়ায় মূল্য সূচক এভাবে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে মোট চালের জোগানের ৪০ শতাংশেরও বেশি আসে ভারত থেকে। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে চলতি মৌসুমে চালের উৎপাদন কম হওয়ায় অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে চাল রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপের এসব পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি।
এমনিতেই গত বছর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। এখন ভারতের এ সিদ্ধান্তে সরবরাহ কমে দাম আরও বাড়তে পারে।
ভারত এখন সব ধরনের অবাসমতী চাল রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করল। আফ্রিকা ও এশিয়ার দরিদ্র ভোক্তারা মূলত এসব অবাসমতী চালের প্রধান ভোক্তা বলে জানান নয়াদিল্লির একজন ডিলার।
নয়াদিল্লির ডিলার জানান, গত মাসে ভারত সরকার সেদ্ধ চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকে এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের ক্রেতাদের কাছে সেদ্ধ চালের চাহিদা বাড়ছিল।
ওই ডিলার বলেন, 'গত মাসে সেদ্ধ চাল রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী সেদ্ধ চালের দাম ২৫ শতাংশের বেশি বেড়ে গিয়েছিল। এরপর গত কিছুদিন সেই দাম খানিকটা কমে এসেছিল। তবে নতুন এই সিদ্ধান্তে এ চালের দাম আবারও বাড়বে।'
খাদ্যদ্রব্যের রপ্তানিতে সাম্প্রতিক বিধিনিষেধগুলো আগামী বছরের দিকে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনের আগে খাদ্য মূল্যস্ফীতির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের সংবেদনশীলতাই দেখিয়ে দিচ্ছে।
মোদির প্রশাসন ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে চালের শিপমেন্ট কমানোর পর গম রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েছে। আখের ফলন কমে যাওয়ায় ভারত সরকার এ বছর চিনি রপ্তানিও সীমিত করেছে।
ভারত সম্প্রতি আরও কিছু পণ্য রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। যেমন, অভ্যন্তরীণ মজুত ও সরবরাহ বাড়াতে এক সপ্তাহ আগেই দেশটি পেঁয়াজের ওপর ৪০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছে।