থাইল্যান্ডে ১৬ বছর ও তদূর্ধ্বরা পাবেন ১০,০০০ বাত, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার উদ্যোগ
অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে থাইল্যান্ডের ৫৫ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্কের মাঝে ৫৬০ বিলিয়ন বাত (১৬ বিলিয়ন মর্কিন ডলার) বিতরণের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। বিনিয়োগে উৎসাহিত করে অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতেই এমন উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন।
থাইল্যান্ডে ১৬ বছর বা এরচেয়ে বেশি বয়সী সকল নাগরিককে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ১০,০০০ বাত (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩০,৯২০ টাকা) দেওয়া হবে। নাগরিকরা তাদের আশেপাশে নির্দিষ্ট পণ্য এবং পরিষেবা খাতে এই অর্থ বিনিয়োগ করতে পারবেন।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দেশটির জাতীয় সংসদে এ সংক্রান্ত নীতি বিবৃতি পাঠ করেন থাই প্রধানমন্ত্রী। এর আগে, নির্বাচনী-প্রতিশ্রুতি হিসেবে যে 'ডিজিটাল ওয়ালেট প্রোগ্রাম'-এর ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, সেই প্রতিশ্রুতিই বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে স্রেথা সরকারের ফিউ থাই পার্টি।
এছাড়া, শীঘ্রই জ্বালানির দাম কমিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। সেইসঙ্গে, বর্তমানে ঋণের বোঝা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন, এমন কৃষক ও ছোট ব্যবসায়ীদের ঋণ স্থগিত করারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ডিজিটাল ওয়ালেট প্রকল্পের অর্থ দেশটির অর্থনীতির প্রতিটি খাতে সমানভাবে বণ্টন করা হবে জানিয়ে থাই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তথাকথিত এই ডিজিটাল ওয়ালেট প্ল্যান আবারও দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তুলতে সাহায্য করবে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) স্রেথা সরকারের মন্ত্রিসভার প্রথম কার্যনির্বাহী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকেই আজ সংসদে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত এসব পদক্ষেপের ওপর স্বাক্ষর করার সম্ভাবনা রয়েছে।
দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, এই প্রকল্পের আওতায় যে অর্থ বিতরণ হবে তার অন্তত চারগুণ ফেরত আসতে পারে। আগামী বছরে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এ বছরের প্রত্যাশিত ২.৮ শতাংশের তুলনায় ৫ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বর্তমানে থাইল্যান্ডের অর্থনীতিতে ধীরতা চলছে। দেশটিতে প্রত্যাশার তুলনায় বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা এবং শীর্ষ বাণিজ্যিক অংশীদার চীনের কাছ থেকে পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় অর্থনীতিতে ধীরতা নেমে এসেছে।
এছাড়া, খরার কারণে চাল ও চিনির উৎপাদন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় দেশটিতে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগে উৎসাহ বাড়াতে ডিজিটাল ওয়ালেট প্রোগ্রাম চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে থাইল্যান্ড।
তবে নতুন করে ঋণ নিয়ে নয়, বরং রাষ্ট্রীয় বাজেট এবং অন্যান্য খাত থেকে অতিরিক্ত কর আদায়ের মাধ্যমে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করতে চায় সরকার। যদিও দেশটির অর্থনীতিরাবিদরা এ ব্যাপারে সতর্ক করে বলেছেন, জাতীয় বাজেট ও করের মাধ্যমে অর্থের যোগান দিতে গেলে তা রাজস্ব ঘাটতিকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এক্ষেত্রে সরকারকে আরও বিচক্ষণ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।