তিন কোটি টাকার ‘উব্লো’র ঘড়ি, হাতের নড়াচড়া থেকে আসে এর শক্তি
বিখ্যাত ঘড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান 'উব্লো' তার মাস্টারপিস (এমপি) সিরিজে যুক্ত করেছে নতুন ঘড়ি 'এমপি-১০ ট্যুরবিলন ওয়েট এনার্জি সিস্টেম টাইটানিয়াম'। এলভিএমএইচ ওয়াচ উইক ২০২৪-এ, উব্লো বিলাসবহুল এ ঘড়িটির উন্মোচন করে। সীমিত সংখ্যক মাত্র ৫০টি ঘড়ি বাজারে ছাড়লেও, উব্লো প্রতিটি ঘড়ির দাম নির্ধারণ করেছে আনুমানিক দুই লাখ ৬৪ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় তিন কোটি টাকা।
উব্লো দাবি করেছে, ৫৯২টি যন্ত্রাংশ ও তাদের প্রকৌশলীদের পাঁচ বছরের পরিশ্রমের ফসল তাদের নতুন ঘড়িটি। ঘড়ির নকাশায়ও এসেছে পরিবর্তন, দেওয়া হয়েছে আধুনিক 'ফিউচারিস্টিক' চেহারা।
ঘড়িটিতে প্রথাগত ঘণ্টা, মিনিটের কাঁটার পরিবর্তে চারটি ঘূর্ণায়মান মেকানিক্যাল রোটর (চাকা) ডিসপ্লে রয়েছে। উপরের দুটি রোটর ঘণ্টা এবং মিনিট প্রদর্শন করে, মাঝের রোটর ঘড়িতে কতটুকু শক্তি সংরক্ষিত আছে তা লাল আর সবুজ রং দিয়ে নির্দেশ করে। আর সবার নিচে ৩৫ ডিগ্রি কোণে থাকা অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি রোটরটি নির্দেশ করে সেকেন্ডকে ।
তবে জটিল নকশার কারণে ঘড়িটি পানির নিচে ডাইভিংয়ের জন্য উপযুক্ত নয়। ঘড়িটি মাত্র ৩০ মিটারের ওয়াটার রেসিস্ট্যান্ট বা পানি প্রতিরোধ সক্ষমতা দেয়।
অন্য কোনো সাধারণ ঘড়ির মত ব্যাটারিতে নয়, উব্লোর এ ঘড়িটির শক্তি আসে মানুষের চলাচল থেকে। একটি বিশেষ ঘূর্ণায়মান সিস্টেম ঘড়িটিকে শক্তি প্রদান করে। ঘড়ির দু পাশে দুটি দোলক বা ওয়েট সিলিন্ডার রয়েছে যা একটি স্প্রিঙের সাথে যুক্ত। হাতের নড়াচড়ায় সিলিন্ডারটি ওপর-নিচ ওঠানামা করে। আর এর সাথে যুক্ত শক অ্যাবজর্ভার নড়াচড়ার মাধ্যমে স্প্রিংটিতে শক্তি স্থানান্তর করে। এই শক্তি থেকেই ঘড়িটি চলে।
উব্লো জানিয়েছে, কোনো নড়াচড়া না করলেও ঘড়িটি অন্তত ৪৮ ঘণ্টা চলতে পারবে এর সংরক্ষিত শক্তি থেকে। তবে ঘড়ির শক্তি একেবারে ফুরিয়ে গেলে ঠিক ওপরে থাকা ক্রাউন আকৃতির স্ক্রুকে ঘোরালে ঘড়িটিতে আবার শক্তি সংরক্ষিত হবে এবং চলতে শুরু করবে।
উল্লেখ্য, সুইস মালিকানাধীন উব্লো ২০০৮ থেকে ফরাসি 'মোয়েট হেনেসি লুই ভিটন এসই বা এলভিএমএইচ' এর অংশ। আর ২০১১ সালে জেনেভা ট্রেড শোতে প্রথম এমপি সিরিজের ঘড়ি উন্মোচন করে উব্লো।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন