নিলামে উঠছে ফর্মুলা ওয়ানের কিংবদন্তি ড্রাইভার শুমাখারের আট ঘড়ি
ফর্মুলা ওয়ানের কিংবদন্তি ড্রাইভার মাইকেল শুমাখারের আটটি ঘড়ি নিলামে উঠতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারকার বিলাসবহুল ব্যক্তিগত এই ঘড়িগুলো ৪.৮ মিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি হতে পারে।
দুর্লভ টাইমপিসগুলো আগামী ৩ মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত নিউ ইয়র্কে প্রদর্শনী করা হবে। আর নিলামকারী সংস্থা ক্রিস্টি'র মতে, আগামী ১৩ মে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ঘড়িগুলো নিলামে তোলা হবে।
সংস্থা ক্রিস্টি'র ঘড়ির প্রধান রেমি গুইলেমিন সিএনএন-কে জানান, শুমাখারের পরিবার বছরের পর বছর ধরে এই চ্যাম্পিয়ন চালকের সংগৃহীত ঘড়িগুলো সংরক্ষণ করে রেখেছে। সম্প্রতি তারা সংগ্রহে থাকা নির্দিষ্ট সংখ্যক ঘড়িগুলিকে নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেননা তাদের বিশ্বাস, ঘড়ি সংগ্রহকারীরা সেগুলো হয়ত আরও ভালোভাবে সংরক্ষণ করতে পারবে।
রেমি বলেন, "আমরা শুমাখারের ঘড়িগুলো নিলামে তুলতে পেরে এবং পরিবারের সাথে যুক্ত হতে পেরে সত্যিই বেশ আনন্দিত।"
শুমাখারের ঘড়িগুলো ছাড়াও ক্রিস্টির নিলামে থাকবে আরও ঐতিহ্যবাহী সব বিরল ঘড়ি। যার মধ্যে রয়েছে অডেমার্স পিগুয়েট ও রোলেক্স ব্র্যান্ডের ঘড়ি।
নিলামকারী সংস্থার তথ্যমতে, হোয়াইট গোল্ডের রয়্যাল ওক ক্রনোগ্রাফ ঘড়িটি শুমাখারকে ব্যক্তিগতভাবে উপহার দিয়েছিলেন জিন টডট। উপহারদাতা ফেরারির সাবেক সিইও এবং সাতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন এই তারকার মেন্টর ছিলেন।
ঘড়িটি ২০০৩ সালের ক্রিসমাসে শুমাখারকে উপহার দেওয়া হয়। ততদিনে তিনি মোট ছয়টি চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে ফেলেছেন। আর তাই ঘড়িটির ৩০ মিনিটের রেজিস্টার ডায়ালের চারপাশে ছয়টি স্টার রয়েছে। একইসাথে রয়েছে ফেরারির বিখ্যাত ঘোড়া ও শুমাখারের লাল রেসিং হেলমেটের প্রতীক।
রেমি বলেন, "এটা বেশ ইউনিক একটা ঘড়ি। দূর থেকে ঘড়িটি দেখলেও বোঝা যায় এটি বিশেষ কিছু যা মাইকেল শুমাখারকে ফুটিতে তোলে।"
প্লাটিনামের ভ্যাগাবন্ডেজ ১ ঘড়িটিও শুমাখারকে জিন উপহার দিয়েছিলেন। এর লাল ডায়ালগুলোতে থাকা সিম্বলগুলো তারকা ফেরারির হয়ে সাতটি চ্যাম্পিয়নশিপ জেতাকে প্রতিফলিত করে।
ঘড়িটির একটি প্রোটোটাইপ ২০০৩ সালে প্যারিস ব্রেইন ইন্সটিটিউট ফাউন্ডেশনে সাহায্যের জন্য বিক্রি করা হয়েছিল। নিলামকারী সংস্থার তথ্যমতে, শুমাখার ও জিন উভয়ই ফাউন্ডেশনটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
রেমি বলেন, "ঘড়িগুলি তাদের জন্যই যারা ফর্মুলা ওয়ান দেখে থাকে এবং আমার মতো যারা শুমাখারের খেলা উপভোগ করতেন। এটি ইতিহাসের একটি সত্যিকারের অংশ এবং ঘড়িগুলো প্রস্তুতকারক কোম্পানির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ এক বিষয়।"
২০১৩ সাথে দুর্ঘটনার মাথায় গুরুতর আঘাত পান শুমাখার। এরপর থেকে তাকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি।
২০২১ সালে নেটফ্লিক্সের এক ডকুমেন্টরিতে শুমাখারের স্ত্রী করিনা বলেন, "আমরা বাড়িতে একসাথে থাকছি। থেরাপি করাচ্ছি। যাতে শুমাখার আরও ভালো বোধ করে। তার স্বাচ্ছন্দ্য বোধ লাভের জন্য যা যা করার আমরা তা-ই করছি।"
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান