এআই-এর কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ৪১% প্রতিষ্ঠান কর্মী কমানোর পরিকল্পনা করছে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) কারণে বিশ্বব্যাপী ৪১ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীসংখ্যা কমানোর পরিকল্পনা করছে। গতকাল বুধবার (৮ জানুয়ারি) প্রকাশিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডাব্লিউইএফ) এক জরিপে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে কয়েকশত বড় প্রতিষ্ঠানের ওপর চালানো এই জরিপে দেখা গেছে, ৭৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে কর্মীদের পুনঃপ্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা উন্নয়নের পরিকল্পনা করছে, যাতে তারা এআইয়ের সঙ্গে কাজ করতে সক্ষম হয়। এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের 'ফিউচার অব জবস' (চাকরির ভবিষ্যৎ) নামক প্রতিবেদনে।
তবে ডাব্লিউইএফ-এর ২০২৩ সালের প্রতিবেদনের মতো এবারের প্রতিবেদনে অধিকাংশ প্রযুক্তি, বিশেষ করে এআই কর্মসংখ্যার জন্য "নেট পজিটিভ" (ইতিবাচক) হবে বলে উল্লেখ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, "এআই এবং নবায়নযোগ্য শক্তির অগ্রগতি শ্রমবাজারকে নতুনভাবে গঠন করছে। এটি প্রযুক্তিগত এবং বিশেষজ্ঞ ভূমিকার চাহিদা বাড়ালেও গ্রাফিক ডিজাইনারের মতো কিছু পেশার চাহিদা কমিয়ে দিচ্ছে।"
প্রতিবেদনটি লিখতে গিয়ে ফোরামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিয়া জাহিদি জেনারেটিভ এআই-এর ভূমিকা তুলে ধরেছেন, যা সব সেক্টরের শিল্প এবং কাজের ধরণ পুনর্গঠনে সাহায্য করছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের নির্দেশনার ভিত্তিতে মৌলিক লেখা, ছবি এবং অন্যান্য সামগ্রী তৈরি করতে সক্ষম।
এআই বা অন্যান্য প্রবণতার কারণে পোস্টাল সার্ভিস ক্লার্ক (ডাক অফিস কর্মী), এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি (নির্বাহী সচিব) এবং পেরোল ক্লার্কের (পারিশ্রমিক সংশ্লিষ্ট কর্মী) মতো কাজগুলো আগামী বছরের মধ্যে দ্রুত কমে আসবে বলে নিয়োগকর্তারা মনে করছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "গ্রাফিক ডিজাইনার এবং লিগ্যাল সেক্রেটারির অবস্থান শীর্ষ ১০টি দ্রুত কমে আসা চাকরির তালিকার বাইরে, যা ফিউচার অব জবস প্রতিবেদনের আগের সংস্করণে কখনো দেখা যায়নি। সম্ভবত এটি জেনারেটিভ এআই-এর জ্ঞানভিত্তিক কাজ করার ক্ষমতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত।"
অন্যদিকে, এআই দক্ষতার চাহিদা বাড়ছে। সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, প্রায় ৭০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এআই টুলস ব্যবহারে সক্ষম নতুন কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করছে। এছাড়া, ৬২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এমন কর্মী নিয়োগ করতে চায় যারা এআই-এর সঙ্গে আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারবে।
প্রতিবেদনটি একটি আশাবাদী দৃষ্টিকোণ তুলে ধরে। সেখানে বলা হয়, জেনারেটিভ এআইয়ের মতো প্রযুক্তির প্রধান প্রভাব হবে "মানব-মেশিন সহযোগিতার" মাধ্যমে মানব দক্ষতাকে পুরোপুরি প্রতিস্থাপন না করে সেটি "বাড়ানো" । বিশেষ করে, "যেহেতু মানুষের দক্ষতার গুরুত্ব বজায় থাকবে।"
তবে, ইতোমধ্যে অনেক কর্মীর চাকরি এআই প্রতিস্থাপন করেছে। সম্প্রতি কিছু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, যেমন ফাইল স্টোরেজ সার্ভিস ড্রপবক্স এবং ভাষা শিক্ষার অ্যাপ ডুয়োলিংগো তাদের কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে এআইকে উল্লেখ করেছে।